Nabanna

কর্মীদের ‘আন্দোলন রুখতে’ নতুন নির্দেশিকা নবান্নের, টিফিনের সময়ও থাকা যাবে না কর্মসূচিতে

এ দিন প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে নবান্ন জানিয়েছে, উপযুক্ত কারণ এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নির্ধারিত সময়ের আগে অফিস থেকে বেরোনো যাবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৩ ০৭:২৬
Share:

নতুন নির্দেশিকা নবান্নে। — ফাইল চিত্র।

সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন নিয়ে তিনি যে অসন্তুষ্ট, তা আগেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অর্থ দফতর জানিয়ে দিল, অফিসের কাজের সময় অন্য কোনও কর্মসূচি বরদাস্ত করবে না সরকার। এমনকি, মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতেও কোনও কর্মসূচিতে থাকা চলবে না। যদিও বিরোধী কর্মচারী সংগঠনগুলির অভিযোগ, ন্যায্য অধিকারের দাবিতে কর্মীদের আন্দোলনে রাশ টানতেই এই পদক্ষেপ। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই এক প্রাথমিক শিক্ষকের বদলি সংক্রান্ত মামলায় ধর্মঘটের বিরোধিতায় সরকারি নির্দেশিকার প্রসঙ্গ উঠেছিল। সেই মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ ছিল, আন্দোলন সরকারি কর্মীদের গণতান্ত্রিক অধিকার।

Advertisement

এ দিন প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে নবান্ন জানিয়েছে, উপযুক্ত কারণ এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নির্ধারিত সময়ের আগে অফিস থেকে বেরোনো যাবে না। বেলা ১টা ৩০ থেকে দু’টোর মধ্যে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতেও অন্য কোনও কর্মসূচি পালন করা চলবে না। অন্যথায় প্রশাসনিক পদক্ষেপের মুখে পড়তে হতে পারে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে। শুধুতাই নয়, সে দিন তিনি অফিসেগরহাজির ছিলেন বলেও ধরে নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, গত সোমবার নবান্নে সরকারি কর্মীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “আপনি সরকারি চাকরি করেন বলে বেতন এবং সুযোগ সুবিধা পান। কিন্তু সপ্তাহে দু’-তিন দিন চার-পাঁচ ঘণ্টা অফিসের কাজ বাদ দিয়ে মিছিল করলে মানুষের পরিষেবা বিঘ্নিত হয়।”

এই নির্দেশিকা নিয়ে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, “ন্যায্য দাবিতেই কর্মীরা আন্দোলন করতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকার দাবি মিটিয়ে দিলে এ সবের দরকার হবে না। টিফিনের সময় কর্মচারীদের ব্যক্তিগত। সেই অধিকারে হস্তক্ষেপ করার ওই আদেশনামা বাতিলের দাবিতে সোমবার টিফিনের সময়ে দফতরে-দফতরে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে।” রাজ্য কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ শীল বলেন, “কর্মচারীদের ব্যাপারে চূড়ান্ত স্বৈরাচারী মনোভাব দেখাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। যত দমন-পীড়ন চলবে, প্রতিরোধ ততই বাড়বে।” কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “কর্মবিরতি পালনে বেতন কাটতে পারে। কিন্তু অন্য শাস্তি দিতে পারে না সরকার।” সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, “টিফিনের সময় কর্মীরা কী করবে, তা ঠিক করে দেবে নতুন বিধি? সোমবার টিফিনের সময়ে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরিকল্পনা আছে।’’ এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “অত্যন্ত অগণতান্ত্রিক। ডিএ-সহ নানাদাবিতে আন্দোলন বানচাল করতেই এই পদক্ষেপ।”

Advertisement

অর্থ দফতর জানিয়েছে, ২২ মে থেকে কয়েকটি সংগঠন কর্মবিরতি (পেন-ডাউন) ঘোষণা করেছে। নির্দেশিকায় দফতরের বক্তব্য, জনস্বার্থে পদক্ষেপ করবে সরকার। হাসপাতালে ভর্তি, নিকটাত্মীয়ের মৃত্যু বা আগে থেকে নেওয়া অন্যান্য বিশেষ কারণের ছুটিগুলি ছাড়া সেই দিনগুলিতে অর্ধ বা পূর্ণদিবসের ছুটি নেওয়া যাবে না। অন্যথায় কারণ দর্শাতে হবে। বক্তব্য সন্তোষজনকনা হলে সে দিনের বেতন কাটাযাবে। দিনটিকে ‘ডায়েস নন’ বলেও ধরা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement