(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের করা মানহানির মামলা ঘিরে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টে ওই মামলার শুনানি ছিল বুধবার। বিচারপতি কৃষ্ণা রাও জানান, আগামী সোমবার, ১৫ জুলাই মামলাটির শুনানি হবে। বুধবার এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি আদালত। কিন্তু শুনানির পর এ বিষয়ে রাজভবন থেকে একটি পোস্ট করা হয় এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে। তা নিয়েই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। পোস্টটি মুছেও দেওয়া হয়েছে।
রাজভবনের এক্স হ্যান্ডল থেকে যে পোস্টটি করা হয়েছিল, তাতে প্রশ্নোত্তরের আকারে রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন আদালতে মমতার বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলার শুনানিতে কী কী ঘটেছে। প্রশ্নটি ছিল, ‘‘কলকাতা হাই কোর্ট কি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করার বিরুদ্ধে কোনও আদেশ দিয়েছে?’’
রাজভবনের হ্যান্ডল থেকে করা পোস্ট, যা পরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তার উত্তরে লেখা হয়, ‘‘কলকাতা হাই কোর্ট মৌখিক ভাবে নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও অবমাননাকর মন্তব্য করা যাবে না।’’ পোস্টে রাজভবন আরও জানায়, রাজ্যপালের আইনজীবীর কাছ থেকে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে যে, ‘‘মানহানির মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। অবমাননাকর মন্তব্যের বিরুদ্ধে আদেশের আবেদন সোমবার শোনা হবে। আদালত মৌখিক ভাবে জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে কোনও অবমাননাকর মন্তব্য করা যাবে না।’’
বেলা ১২টা ৫৯ মিনিটে পোস্টটি করেছিল রাজভবন। তবে কিছু ক্ষণ পরেই এই পোস্ট মুছে দেওয়া হয়।
বস্তুত, বুধবার মানহানির মামলা নিয়ে আদালত কোনও মন্তব্যই করেনি। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যে অবমাননাকর মন্তব্যগুলি করা হচ্ছে, তা যেন আর না করা হয়, তাঁর আইনজীবী আদালতে সেই আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিচারপতি জানান, এ বিষয়ে বুধবার তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না। পরবর্তী শুনানির দিন, অর্থাৎ আগামী সোমবার বিষয়টি শোনা হবে।
কিসের ভিত্তিতে রাজভবনের হ্যান্ডল থেকে বুধবারের শুনানি সংক্রান্ত ওই পোস্টটি করা হল, কেনই বা তা সরিয়ে নেওয়া হল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। অনেকে এই পোস্টের বিষয়বস্তু নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। রাজভবনের পোস্টে বলা হয়েছিল, ১৫ জুলাই পরবর্তী শুনানি। তার আগে এই সময়ের মধ্যে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও অবমাননাকর মন্তব্য করা যাবে না বলে মৌখিক ভাবে জানিয়েছে আদালত। কিন্তু আইন মহলের একাংশের বক্তব্য, কোনও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অবমাননাকর মন্তব্য না করার নির্দেশ আদালত দিতে পারে না। কারণ, কারও বিরুদ্ধে কখনওই অবমাননাকর মন্তব্য করা যায় না। মুখ্যমন্ত্রীর যে মন্তব্যের ভিত্তিতে এই মামলা, তা আদৌ অবমাননাকর কি না, সেটাই মামলার বিচার্য বিষয়।