ফাইল চিত্র।
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের যে মানচিত্র রেখে গিয়েছেন, তাকে এখনও পর্যন্ত বিজেপি অটুটই দেখতে চায়। তবে উত্তরবঙ্গের প্রতি ‘বঞ্চনা’র প্রেক্ষিতে সেখানকার মানুষ যে পৃথক রাজ্য চান, তা-ও অস্বীকার করা যায় না। বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি হয়ে উত্তরবঙ্গকে আলাদা করার দাবির প্রশ্নে এই অবস্থান জানালেন সুকান্ত মজুমদার। বিজেপির সদ্য প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্যের থেকে যা আলাদা নয়।
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা এবং উত্তরবঙ্গের কয়েক জন বিধায়ক উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার দাবিতে সরব হয়েছেন। দিলীপ-সহ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ওই দাবিতে তাঁরা সহমত নন। তবে ওই দাবি উঠছে বঞ্চনার ফলে। উত্তরবঙ্গের বালুরঘাটের সাংসদ এবং সেখানকার বাসিন্দা সুকান্ত মঙ্গলবার এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘জন বার্লা সাংসদ। সাংসদদের কাজ জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরা। আর উত্তরবঙ্গের জনগণের মধ্যে আলাদা রাজ্যের ইচ্ছা নেই বললে ভাবের ঘরে চুরি করা হবে। কিন্তু বিজেপির এখনও পর্যন্ত অবস্থান হল, আমরা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের রেখে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রকে অটুটই রাখতে চাই।’’
উত্তরবঙ্গের প্রতি রাজ্য সরকারের বঞ্চনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন কলকাতা-কেন্দ্রিক হওয়ার ফলে উত্তরবঙ্গের মানুষের মনে বঞ্চনার বোধ তৈরি হয়েছে। সেখানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে এক জন নিউরো সার্জেনও নেই। ওখানকার রাস্তায় কোনও গরিবের দুর্ঘটনা ঘটলে তাঁর গঙ্গাপ্রাপ্তি হবে। কারণ তিনি আর্থিক কারণে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সেখানে শুধু বড় বড় ভবন তৈরি হয়েছে। আর কিছু নেই। নীল-সাদা ভবন তৈরি করে সেটাকেই উন্নয়ন বলে দাবি করা— এটা দীর্ঘ দিন চলতে পারে না।’’
সুকান্তর অভিযোগ উড়িয়ে শিলিগুড়ির পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা গৌতম দেব বলেন, ‘‘এই অভিযোগগুলির কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে উত্তরবঙ্গে প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে টাটা ক্যান্সার হাসপাতালের শাখা খুলছে। শিলিগুড়িতে আলাদা প্রশাসনিক ভবন উত্তরকন্যা গড়ে উঠেছে। সুতরাং, উত্তরবঙ্গের মানুষ বঞ্চিত, এটা বিজেপির অপপ্রচার ছাড়া কিছুই নয়।’’ গৌতমের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘সুকান্তবাবু তো দীর্ঘ দিন উচ্চশিক্ষার সঙ্গে জড়িত। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আমলে উত্তরবঙ্গে ক’টা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে?’’