নিসর্গ: নেপালের পোখরা লেক। ফাইল চিত্র
বছর দু’য়েক আগের ভূমিকম্প নাড়িয়ে দিয়েছিল নেপালের পর্যটনের ভিত। সেই অভিজ্ঞতাকে পিছনে ফেলে ফের এগোতে চাইছে নেপালের পর্যটন বোর্ড। আর এই কাজে তারা সাহায্য নিচ্ছে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন পর্যটন সংগঠনগুলোর। সম্প্রতি এদেশের সংগঠনগুলিকে নেপালে নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি সরজমিনে দেখানো হয়েছে।
‘এক্সপেরিয়েন্স নেপাল’ বা ‘ওয়ান্স ইস নট এনাফ’ এমনই একাধিক স্লোগানকে সামনে রেখে এগোতে চাইছে নেপালের পর্যটন বোর্ড। নীতি নির্ধারণ থেকে প্রচারের কৌশল সবই ভারতের সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এগোতে চাইছেন তারা। আগামী জুন মাসে শিলিগুড়ি বা কলকাতায় সেমিনার, রোড-শো ও বিজনেস মিটের পরিকল্পনাও হয়েছে। ভারতের পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, ২০০০ সালে নেপালের মোট পর্যটন ব্যবসার অন্তত ৩৫ শতাংশ এসেছিল ভারতীয় পর্যটকদের থেকে। ২০১৪ সালে তা আরও বাড়ে। কিন্তু ২০১৫-র ভূমিকম্প বদলে দেয় নেপালকে। ভেঙে পড়ে কাঠমান্ডুর দরবার স্কোয়ার, ৬১ মিটারের ভিমসেন টাওয়ারের মতো পর্যটন স্থল। সেই ঘটনার জেরে নেপালের পর্যটন ব্যবসা এক ধাক্কায় ৭৫ শতাংশ কমে গিয়েছে।
নেপাল পর্যটন বোর্ডের অন্যতম মুখপাত্র সুরিয়া থাপালিয়া জানিয়েছেন, ভারতীয় পর্যটকদের কাছে নেপাল সবসময় আকর্ষণীয়। বিভিন্ন ভারতীয় সিনেমায় নেপাল বারবার উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ‘‘একটা বিপর্যয় হয়েছে ঠিকই। আমরা তা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছি। নেপালের বহু জায়গা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি। কিন্তু অন্যরকম প্রচার হচ্ছে।’’ কাঠমান্ডুর পশুপতি মন্দির, পোখরার লেক, চিতওয়ানের একশৃঙ্গ গন্ডার পর্যটকদের পছন্দের সারিতে রয়েছে। এছাড়াও, নাগারকোটের কাঞ্চনজঙ্ঘার সূর্যোদয়, মাউন্ট এভারেস্টের বেস ক্যাম্প বা অন্নপূর্ণা ট্রেকের আকর্ষণও কম নয়। পর্যটকদের কাছে সমান জনপ্রিয় নেপালের ক্যাসিনো ব্যবসাও। এ ছাড়াও নতুন কিছু এলাকাও খুলে দেওয়া হচ্ছে পর্যটকদের জন্য। এর মধ্যে রয়েছে উত্তরবঙ্গ লাগোয়া ইলাম, ধারানের মতো নতুন এলাকাও।
সম্প্রতি যে পর্যটন সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা নেপালে গিয়েছেন, তাদের অন্যতম উত্তর পূর্বাঞ্চলের ‘এতোয়া।’ ওই সংগঠনের সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘আমাদের ব্যবসার একটা বিরাট অংশ নেপাল নির্ভর। ভয়, আতঙ্ক নেপালের নামের সঙ্গে জুড়ে গিয়ে তা নষ্ট হটে বসেছিল।’’ এই ভাবনা বদল করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। শিলিগুড়়ি, কলকাতা তো বটেই নেপাল বোর্ডের সদস্যরা মুম্বই-দিল্লিতেও যাচ্ছেন।