আসন সমঝোতা নিয়ে প্রাথমিক আপত্তি সরিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসল বাম শরিক সিপিআই।
লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ও বামেদের আসন সমঝোতার প্রক্রিয়া আরও একটু এগোল। প্রাথমিক আপত্তি সরিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসল বাম শরিক সিপিআই। আর এক শরিক আরএসপি-রও সমঝোতার প্রশ্নে কোনও কট্টর অবস্থান নেই। তবে বামফ্রন্টের অন্দরের সমীকরণ স্পষ্ট হওয়ার আগে তারা কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনায় যাচ্ছে না। কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও রকম বোঝাপড়ায় আপত্তি বজায় রেখে কট্টরপন্থী অবস্থান নিয়েছে একমাত্র ফরওয়ার্ড ব্লক। তিন শরিক দলের সঙ্গে একত্রে বৈঠক করার পরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র সমঝোতার বিষয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে ঠিক হয়েছে।
প্রদেশ কংগ্রেসের সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলোচনায় বসেছিল দলের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সিপিআইয়ের প্রতিনিধিদল। বাংলায় তৃণমূল ও বিজেপির মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে ভোটের বাক্সে একজোট করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে দু’দলই একমত। তবে বামফ্রন্টের মধ্যে আসন ভাগাভাগির নিষ্পত্তি হওয়ার আগে কংগ্রেসকে কোন আসন কোথায় ছাড়া যাবে, তা নিয়ে কথা বলা সমস্যাজনক বলেই সিপিআই নেতৃত্ব প্রদীপবাবুকে জানিয়েছেন। আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী আবার এ দিনই বৈঠকে বসে ঠিক করেছে, তাদের ভাগের চারটি আসনে তারা প্রাথমিক ভাবে লড়তে চায়। তবে সমঝোতার বিষয়টি অবশ্যই আলোচনাসাপেক্ষ। সিপিএমও তাদের ভাগের ৩০টি আসনের জন্য জেলা নেতৃত্বের কাছ থেকে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা আনিয়ে রেখেছে। বোঝাপড়ার প্রক্রিয়া যেমন ভাবে এগোবে, সেই অনুযায়ী প্রার্থী চূড়ান্ত করবে আলিমুদ্দিন।
কংগ্রেসের ঘরের সমস্যা অবশ্য এখনও কাটেনি। রায়গঞ্জ আসনে প্রার্থী দেওয়ার দাবি যেমন উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস বজায় রেখেছে, তেমনই মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হেনা বিধান ভবনে এসে জানিয়ে গিয়েছেন, তাঁরা মুর্শিদাবাদ আসনে লড়তে চান! তাঁদের দাবি, ওই কেন্দ্রে সিপিএমের তেমন সংগঠন নেই। তা ছাড়া, ডোমকল বা জলঙ্গির মতো জায়গায় কংগ্রেস কর্মীদের সিপিএম প্রার্থীকে ভোট দিতে রাজি করানো মুশকিল। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতা অবশ্য বলছেন, ‘‘বোঝাপড়াও করব আবার সিপিএমের হাতে থাকা দু’টো আসনই চাইব— দু’টো একসঙ্গে হয় না! কারও ব্যক্তিগত ইচ্ছার জন্য বাংলায় গোটা কংগ্রেসের সম্ভাবনা নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।’’ এই পরিস্থিতিতে প্রদেশ কংগ্রেসও ২৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিটির বৈঠক ডেকেছে। পর দিন বৈঠক সিপিএমের রাজ্য কমিটির।