—নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে লোকসভা ভোটে ফল খারাপ হলেও দলের লাইনে কোনও বদল চাইছে না প্রদেশ কংগ্রেস। বামেদের সঙ্গে জোট করতে না পারার ফলে বাংলায় বিজেপির সুবিধা হয়ে গিয়েছে বলে সিপিএমের মতোই মনে করছে কংগ্রেসও। তারা মনে করছে, এখনও বামের সঙ্গে জোট বেঁধে বিকল্প মঞ্চ গড়ে তোলার সুযোগ আছে। সময় নষ্ট না করে দ্রুত সেই উদ্যোগ ফের শুরু করার জন্য দিল্লির কাছে আর্জি জানাতে চলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
মেরুকরণের আবহে এ বার বহরমপুর ও মালদহ দক্ষিণ লোকসভা আসন দু’টি ধরে রাখতে পেরেছে কংগ্রেস। সেই দুই কেন্দ্রের বিজয়ী প্রার্থী অধীর চৌধুরী ও আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী এবং তার সঙ্গে এআইসিসি-র তরফে বাংলার ভারপ্রাপ্ত নেতা গৌরব গগৈয়ের অসমের কালিয়াবর কেন্দ্রে ফের জয়ের জন্য শনিবার ‘সম্মাননা’রআয়োজন হয়েছিল বিধান ভবনে। দিল্লিতে পারিবারিক কাজে আটকে যাওয়ায় অধীরবাবু অবশ্য আসতে পারেননি। দুই সাংসদের ‘সম্মাননা’র মঞ্চ থেকেই গৌরব আত্মসমালোচনার সুরে বলেছেন, বামেদের সঙ্গে জোট করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ কংগ্রেস করতে পারেনি। আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ইঙ্গিত দিয়েছেন, ‘স্রোতে গা ভাসিয়ে’ বা শুধুই পদ আঁকড়ে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের সরিয়ে সংগঠনে রদবদলও করা হবে। ভোট-পরবর্তী বিশ্লেষণের জন্য আগামী ১৫ জুন প্রদেশ কর্মসমিতির বৈঠক ডেকেছে কংগ্রেস।
বিধান ভবনে গৌরব এ দিন বলেন, ‘‘রাজ্যের সব মানুষ তৃণমূল বা বিজেপিকে নিয়ে খুশি নন। অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা তৃতীয় বিকল্প চান। বিকল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে বামেদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির পদ্ধতিতে ভুল হয়ছিল। আমাদের আরও দু’কদম এগোনো উচিত ছিল, আমরা সেটা করতে পারিনি।’’ তাঁর মতে, ‘‘বিকল্প না দিতে পারার ফলে বাম ও কংগ্রেসের ক্ষতি তো হয়েছেই। কিন্তু সব চেয়ে বেশি মুশকিলে পড়েছেন বাংলার মানুষ।’’ মাটি কামড়ে পড়ে থেকে কর্মীদের এখন থেকেই পুরসভা ও বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরুর পরামর্শ দিয়েছেন গৌরব। সোমেনবাবুর বক্তব্য, ‘‘বাস্তবসম্মত বিকল্প দিতে পারলে এখনও লড়াই সম্ভব। বামপন্থী বন্ধুদের বলেছিলাম, পর্দার আড়ালে জোট করলে মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা পাওয়া যাবে না। এখনও বিকল্প তৈরির চেষ্টা করতে হবে, তবে বন্ধুত্বের হাত ধরার জন্য আগে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।’’
ডালুবাবু বুঝিয়ে দিয়েছেন, আপাতত কংগ্রেসের নিশানা হওয়া উচিত গ্রাম। তাঁর কথায়, ‘‘শাসক দলের অত্যাচারে, অপশাসনে গ্রামের মানুষ রাগান্বিত। তাঁদের পাশে গিয়ে আমাদের দাঁড়াতে হবে। বিপদে পাশে থাকতে হবে।’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এ দিন অবশ্য অনুষ্ঠানে ছিলেন না। ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁর বক্তব্য, প্রদেশ সভাপতির উপস্থিতিতেই বিধান ভবনে তাঁর উপরে হামলা হয়েছিল, হামলাকারীদের ইফতারে সভাপতি গিয়েছেন। তার পরে কোন ‘নিরাপত্তা’র ভরসায় তিনি প্রদেশ দফতরে যাবেন?
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।