ইতিমধ্যেই রাজ্যের মহিলা এবং শিশু কল্যাণ দফতরের মুখ্যসচিবের কাছে সাম্প্রতিকতম স্ট্যাটাস রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে কমিশন। প্রতীকী ছবি।
বাল্যবিবাহের অভিযোগ পেয়েও রাজ্য কি যথাযথ পদক্ষেপ করেনি? এমনই প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিল জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। প্রায় ১৬৩০টি বাল্যবিবাহের ঘটনার তথ্য দিয়ে তারা জানতে চেয়েছে, এই অভিযোগগুলি পাওয়ার পর কী হয়েছিল? শেষ পর্যন্ত কি শিশুটিকে অপ্রাপ্তবয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছিল? পুলিশি পদক্ষেপের কোনও রেকর্ড কেন নেই? রাজ্যকে দেওয়া চিঠিতে এই সব প্রশ্নের উত্তর জানাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে কমিশন বলেছে চিঠি পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে জবাব দিতে হবে রাজ্যকে।
রাজ্যকে দেওয়া চিঠিতে শিশুসুরক্ষা কমিশন জানিয়েছে, বাল্যবিবাহ নিয়ে তাঁরা দেশের বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জেলাভিত্তিক রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিল সংশ্লিষ্ট শিশু এবং মহিলা কল্যাণ দফতরের কাছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই তারা জানতে পেরেছে, পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি জেলায় ৪০০১টি বাল্যবিবাহের ঘটনা দেখা গিয়েছে। এই হিসাব ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত। কমিশন জানিয়েছে, এই ৪০০১টি ঘটনার মধ্যে ২৯৩৯টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বাকি ১০৬১টি ঘটনায় এফআইআর দায়ের হয়েছিল কি না বা তার ভিত্তিতে কোনও পদক্ষেপ করা হয়েছিল কি না— তার কোনও হিসাব নেই।
আরও একটি হিসাব দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টম্বর পর্যন্ত ২৭৩২টি বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যাচ্ছে। এর মধ্যে ২১৫৪টি ঠেকানো গেলেও বাকি ৫৭৮টি ঘটনায় শেষপর্যন্ত কী হল, তা বলা হয়নি। সব মিলিয়ে কমিশনের হিসাব অনুযায়ী ১৬৩৯টি বাল্যবিবাহের ঘটনার হিসাব নেই। কমিশন অবশ্য চিঠিতে জানিয়েছে, তারা ১৬৩০টি ঘটনার হিসাব চায়।
এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই রাজ্যের মহিলা এবং শিশু কল্যাণ দফতরের মুখ্যসচিবের কাছে সাম্প্রতিকতম স্ট্যাটাস রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল এবং তিনি দিল্লিতে গিয়ে তা দিয়েও এসেছেন বলে জানিয়েছে কমিশন। তার পরেই হিসাব না মেলা বাল্যবিবাহের ঘটনার নিষ্পত্তি হয়েছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রাজ্যের কাছে। বর্তমানে ওই ঘটনাগুলির তদন্ত কোথায় দাঁড়িয়ে আছে, পুলিশি তদন্ত কতটা এগিয়েছে, তাও জানাতে বলা হয়েছে সরকারকে।