ইমন ও চারুকেশী রাগকে ভিত্তি করে গান।
সমাজের যুবক-যুবতীরা যাতে মাদকের নেশা থেকে সরে আসেন, তার জন্য এই গান লিখেছেন মহসিন আখরাত। আর সেই গানের সিডি করে কলকাতার কলেজে কলেজে সরবরাহ করতে চলেছে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই সংস্থা গত কয়েক মাস ধরে শহর তথা রাজ্যে সক্রিয়। তাদের অভিযানে বার বার উঠে আসছে অভিজাত, উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের নাম। দেখা গিয়েছে, সল্টলেক-সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা মূলত বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানেজমেন্ট কলেজের এক শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে কোকেন, এমডিএমএ, এলএসডি-র নেশার প্রবণতা মারাত্মক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যক্তিগত পার্টিতেও দেদার মাদক ব্যবহার করা হচ্ছে। রীতিমতো শিক্ষিত, পড়াশোনা করা এক শ্রেণির যুবক ইন্টারনেট ব্যবহার করে কখনও বিদেশ থেকে, কখনও দেশের ভিতর থেকে এই ধরনের রাসায়নিক মাদক নিয়ে এসে তা যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে সরবরাহ করছেন।
ইতিমধ্যেই কলেজে কলেজে সচেতনতা শিবির করেছে এনসিবি। এনসিবি-র পূর্বাঞ্চলের কর্তা দিলীপ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, বক্তৃতা দিয়ে বা পোস্টার লিফলেটের থেকেও গানের মাধ্যমে প্রচার আরও বেশি কার্যকর হবে বলে তাঁরা মনে করছেন। সেই সিডি-মারফত দিলীপবাবু জানিয়েছেন, মাদকের নেশা এখন ভাইরাসের মতো ছড়াচ্ছে। পরিবারের কেউ মাদকাসক্ত হলে সেই পরিবার শুধু সামাজিক ভাবে নয়, আর্থিক ভাবেও প্রভাবিত হচ্ছে। এনসিবি-র সঙ্গে এই কাজে এগিয়ে এসেছে একটি সংস্থা। সিডি-র তিনটি গান গেয়েছেন শান্তা কুণ্ডু, একটি প্রণয় দত্ত। সবগুলিই হিন্দিতে লেখা এবং রাগাশ্রয়ী। দিলীপবাবু জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি শহরের কলেজগুলিতে এই সিডি পৌঁছে দেওয়া হবে এবং কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হবে যাতে ক্লাস থাকবে না এমন কোনও সময়ে ছাত্রছাত্রীদের এই গান ও দিলীপবাবুর বার্তা শোনাতে।
মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (ম্যাকাউট) অধীনে রয়েছে রাজ্যের এই সব বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। ড্রাগের নেশা আটকাতে উপাচার্য সৈকত মৈত্র কাউন্সেলিংয়ের উপরে জোর দিয়েছেন। তিনি জানান, প্রতিটি কলেজকে তাঁরা বারবারই এই সমস্যা মোকাবিলায় গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে চলেছেন। পড়ুয়াদের জন্য মেন্টর রাখার কথাও বলা হয়েছে। শিক্ষকেরাই সেই ভূমিকা পালন করবেন। মাদকাসক্তদের কাউন্সেলিংয়ের কথাও বলা হচ্ছে। গত বছরই ম্যাকাউটের সল্টলেক ক্যাম্পাসে তৈরি হয়েছে কাউন্সেলিং সেন্টার। কলেজগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যদি নিজেদের কাউন্সেলিং সেন্টারে কোনও পড়ুয়ার সমস্যা না মেটে তা হলে ম্যাকাউটের সেন্টারে পাঠাতে। এখানে মানসিক, এবং শারীরিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। এ দিন উপাচার্য বলেন, ‘‘এই সেন্টারটিকে আরও ভাল ভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। আরও কাউন্সেলর আনা হচ্ছে।’’