Santosh Rana

নকশালপন্থী নেতা সন্তোষ রানা প্রয়াত

আমৃত্যু সর্বক্ষণের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেই কাজ করেছেন সন্তোষ রানা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯ ১৩:৪৪
Share:

প্রয়াত সন্তোষ রানা। ছবি: নিজস্ব চিত্র

চলে গেলেন সাতের দশকের নকশালপন্থী আন্দোলনের সামনের সারির নেতা এবং আনন্দ পুরস্কার জয়ী সন্তোষ রানা। বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। শনিবার সকাল ৬ নাগাদ দেশপ্রিয় পার্কের এক নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয়। দীর্ঘ দিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে তাঁর দেহ দান করা হয়েছে।

Advertisement

সন্তোষ রানার জন্ম বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুরের গোপীবল্লভপুরে। মেধাবী ছাত্র সন্তোষ ছয়ের দশকে পড়তে আসেন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে। পদার্থবিদ্যায় এমএসসি-তে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। গবেষণা করতে করতেই সক্রিয় ভাবে জড়িয়ে পড়েন নকশাল আন্দোলনে। নকশালবাড়ির কৃষক আন্দোলনের পর, যে সব ছাত্রযুব ‘গ্রামে চলো’র ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন, সন্তোষ রানা তাঁদের অন্যতম। ডেবরা-গোপিবল্লভপুর অঞ্চলে কৃষকদের সংগঠিত করার কাজ করেন তিনি। পরবর্তীতে ধরা পড়েন। জেলে ছিলেন দীর্ঘ দিন। ১৯৭৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, জেলে বসেই লড়ে তিনি গোপীবল্লভপুর আসনে জিতেছিলেন।

আমৃত্যু সর্বক্ষণের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেই কাজ করেছেন সন্তোষ রানা। নকশালপন্থী নেতা চারু মজুমদারের মৃত্যুর পর সিপিআই (এম এল) ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল। সন্তোষ রানা পিসিসি সিপিআই (এম এল) নামক গোষ্ঠীর নেতা ছিলেন দীর্ঘ দিন।

Advertisement

নকশালপন্থী আন্দোলনের খতম লাইন বা গণসংগঠন-গণআন্দোলন বয়কটের মতো অতিবাম, হঠকারী রাজনীতির বিরুদ্ধে পরবর্তী কালে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি। সিপিআই (মাওবাদী)-দের খুনের রাজনীতি নিয়েও সরব হয়েছেন বার বার। একই সঙ্গে, এ দেশে বামপন্থী রাজনীতিবিদদের মধ্যে— অর্থনৈতিক শ্রেণিবৈষম্যের পাশাপাশি জাতপাত বা বর্ণপ্রথার মতো সামাজিক বৈষম্যকে অন্যতম প্রধান গুরুত্ব দিয়ে দেখার কথা যাঁরা বলেন, সন্তোষ রানা তাঁদের অগ্রণীদের মধ্যে একজন। রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিষয় নিয়ে লেখালেখি করে গিয়েছেন আজীবন।

তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘রাজনীতির এক জীবন’-এর জন্য সন্তোষ রানা আনন্দ পুরস্কার পান ২০১৮ সালে। তাঁর হাতে আনন্দ সম্মান তুলে দিয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।

প্রথম স্ত্রী জয়শ্রী রানার সঙ্গে রাজনৈতিক মতভেদের কারণে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁর। পরে বিয়ে করেন দেবী চট্টোপাধ্যায়কে, যিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যাপনা করতেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement