ভারি বৃষ্টির জেরে ধসের আতঙ্ক বাড়ছে উত্তর সিকিমে মঙ্গন, চুংথাম, লাচুং এলাকায়। ওই সমস্ত এলাকায় ৩১–এ জাতীয় সড়কের নানা জায়গায় ফের নতুন করে ধস নামতে শুরু করেছে। রবিবার রাত থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত অন্তত ৩টি জায়গায় নতুন করে ধস পড়েছে। তার মধ্যে রয়েছে মঙ্গন থেকে গ্যাংটকে ফেরার পথে ‘জিরো’ এলাকা, মঙ্গন থেকে চুংথামে যাতায়াতের রাস্তায় লাংচেখোলা। ওই দু’টি এলাকায় নতুন করে ধস পড়েছে। তাতে উদ্বিগ্ন আটকে পড়া পযর্টকদের অনেকেই। দফায় দফায় প্রবল বৃষ্টির জেরে ধস সরানোর কাজও ব্যাহত হয়ে পড়ায় সমস্যা বেড়েছে। পরিস্থিতির জেরে রবিবার থেকেই ওই এলাকায় নতুন করে পর্যটকদের আসার অনুমতি দিচ্ছে না সিকিমের পুলিশ প্রশাসন। আটকে পড়া পর্যকদের সাহায্য করতে সেনা বাহিনীর জওয়ানরাও কাজ করছে।
পর্যটকদের অনেকেই আর ওই এলাকায় থাকতে চাইছেন না। ধস বিধ্বস্ত সড়কের অংশ হেঁটে তাঁরা চার পাঁচ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছচ্ছেন। সেখান থেকে বিভিন্ন পর্যটন সংস্থার গাড়ি করে তাদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিদেশি পর্যটকের সঙ্গে দেশের ভিন রাজ্যের এবং এই রাজ্যের প্রচুর পর্যটক রয়েছেন। ইস্টার্ন হিমালয়া ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরি সভাপতি সম্রাট সান্যাল জানান, অনেক পর্যটককে ইতিধ্যেই ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাকিদের ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে। লাগাতার বৃষ্টি জেরে ধসের আতঙ্ক বাড়ছে।
শুত্রবার রাতেই ৩১-এ নম্বর জাতীয় সড়কে চুংথাম এবং লাচুংয়ের রাস্তায় তুংসুঙে বড় ধরনের ধস পড়েছে। লাচুং যাওয়ার পথে আটকে পড়েন অন্তত ৪০০ পর্যটক। তিন দিন ধরে তাঁদের অনেকেই আটকে রয়েছেন। চুংথামের কাছে একটি গুরুদ্বারে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন। ওই রাত থেকেই বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনের তরফে ধস সরানোর কাজ শুরু হলেও বৃষ্টিতে তা পণ্ড হয়ে যায়।
পর দিন সকালে কাজ শুরু করতে গেলেও বৃষ্টিতে আটকে যায় ধস সরানোর কাজ। তুংসুং থেকে লাচুংয়ের দূরত্ব ৮/১০ কিলোমিটার। সে কারণে লাচুংয়ের দিক থেকে যে পর্যটকেরা চুংথাম হয়ে ফিরে যেতে রওনা হয়েছিলেন তাঁরাও আটকে পড়েন। তারা চুংথামেই ফিরে যান। ওই রাস্তায় ধস এখনও সম্পূর্ণ সরানো যায়নি। বিভিন্ন পর্যটন সংস্থাগুলির কর্মকর্তারাই জানান, শনিবার চুংথাম এবং মঙ্গনের মাঝে টুঙে ধস পড়ে। রাস্তার একটা বড় অংস বসে গিয়েছে। রবিবার রাত থেকে আরও কয়েক জায়গায় ধস পড়ে জাতীয় সড়ক বিভিন্ন জায়গায় বন্ধ হয়ে রয়েছে। গুরুদ্বারের পাশাপাশি মঙ্গন এবং চুংথামের মাঝে নাগা এলাকার একটি স্কুলে পর্যটকদের অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন। সেনা জওয়ানরা তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।