অন্তঃসত্ত্বা মহিলার উপর অত্যাচার চালানো হয়। প্রতীকী ছবি।
প্রোমোটারি নিয়ে বিবাদের জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নারকেলডাঙা। অভিযোগ, বিবদমান পরিবারকে স্থানীয় বিধায়ক এবং কাউন্সিলর তলব করেন। ওই পরিবারের দাবি, স্থানীয় ‘গুণ্ডা’র হামলা চালিয়েছে। আরও অভিযোগ, পরিবারের সদস্য এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলার উপর অমানবিক অত্যাচার করা হয়, তাঁর পেটে লাথি মারা হয়। যার জেরে এখন ওই মহিলা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। সোমবার এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র নারকেলডাঙা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপির মহিলা মোর্চা। পুলিশ সূত্রে খবর, এ পর্যন্ত ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নারকেলডাঙার বাসিন্দা শিবশঙ্কর দাস এবং তাঁর ছেলে দীপক দাস সংবাদ মাধ্যমে অভিযোগ করেন, বিধায়ক পরেশ পাল এবং কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার প্রোমোটারদের সঙ্গে হওয়া সমস্যা নিয়ে কথা বলার জন্য তাঁদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন। স্থানীয় নেতার ‘ছেলেরা’ তলব করেন তাঁদের। যদিও তাঁরা যাননি। দেখা করতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের উপর ওই হামলা বলে অভিযোগ।
বিজেপির দাবি, এই ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক পরেশ পাল এবং কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দারের অনুগতেরা রয়েছে। তাঁরাই পরিবারটির উপর চড়াও হয়ে অন্তঃসত্ত্বা মহিলার উপর অত্যাচার চালান। আক্রান্ত হন ওই মহিলার স্বামী দীপক দাসও। পরে তিনি থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে, তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিজেপির অভিযোগ, ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল নেতা জড়িত থাকায় পুলিশও সহযোগিতা করেনি আক্রান্ত পরিবারটির সঙ্গে।
অন্য দিকে, তৃণমূলের বক্তব্য, বিজেপি কোথাও কোনও গোলমাল দেখলেই তাতে তৃণমূলকে দোষারোপ করার চেষ্টা করে। আসলে তারা এ ভাবেই, বিভিন্ন মিথ্যে ইস্যুকে নিয়ে বাংলার রাজনীতিতে ভেসে থাকতে চায়। সুযোগ পেলেই কলঙ্কিত করতে চায় তৃণমূলকে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘বাংলায় নির্মমতা চলছে। অন্তঃসত্ত্বা মহিলারাও রেহাই পাচ্ছেন না। এত দিন রাজ্যের গ্রামে এই ধরনের ঘটনা ঘটত, এখন দেখা যাচ্ছে খাস কলকাতাতেও এই ঘটনা ঘটছে। মা-মাটি-মানুষের কথা বলে যে তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে, সেই দল এখন মা-এর উপরও আঘাত হানছে। এ বার এই দম্ভের পতন নিশ্চিত।’’
অন্য দিকে, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘‘এক ব্যক্তি, যাঁকে বিজেপি অফিসে মাঝে মধ্যে দেখা যায়, তাঁর বাড়ির বাসিন্দাদের মধ্যে সমস্যায় কোনও রাজনৈতিক দলেরই আসার কথা নয়। আমরাও প্রকৃত দোষীর শাস্তি চাই। কিন্তু বরাবরই দেখা যাচ্ছে, যখনই এ ধরনের ঘটনা হয়, তখন তৃণমূলকে দোষারোপ করা হয়। এর আগে উত্তরবঙ্গে হয়েছে। কাশীপুরেও হয়েছে। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই শেষ পর্যন্ত দোষ প্রমাণ করতে পারেননি অভিযোগকারীরা।’’
ঘটনা সম্পর্কে ডিসি দক্ষিণ প্রিয়ব্রত রায় সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘‘পুলিশ যে অভিযোগ পেয়েছে, তার ভিত্তিতে একটা মামলা ইতিমধ্যেই দায়ের করা হয়েছে। ওঁরা যদি আবার বয়ান দেন, যদি আবার অভিযোগ করেন, তবে আমরা নতুন মামলা দায়ের করব। জামিন অযোগ্য ধারাতেই মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উনি আপাতত সুস্থ আছেন।’’