— ফাইল ছবি।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশ ছিল, সোমবার রাতের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে নরেন্দ্রপুরের স্কুলের প্রধানশিক্ষক সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ-সহ চার জনকে। কিন্তু আদালত নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে, এখনও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি প্রধানশিক্ষককে। এই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুর ২টোয় পুলিশ সুপারকে এই সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বসু।
আদালতে রাজ্যের আইনজীবী জানান, অভিযুক্তদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ কিন্তু এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। বিচারপতি বসু তাতে উষ্মাপ্রকাশ করেন। বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপারকে এ বিষয়ে দুপুর ২টোর মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির থাকতে হবে পুলিশ সুপারকেও। বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, পুলিশ সুপারের দেওয়া রিপোর্টে আদালত সন্তুষ্ট না হলে কড়া পদক্ষেপ করা হতে পারে। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, এই স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়বে। তার সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকবে প্রশাসন।
এ দিকে, আদালতে স্কুলে গোলমাল নিয়ে বিচারপ্রক্রিয়া পুরোদমে চললেও এখনও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারেনি বলরামপুর মন্মথনাথ বিদ্যামন্দির। আক্রান্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেশির ভাগই মঙ্গলবার সকালে উপস্থিত হয়েছেন। যদিও বেশ কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকা গরহাজির। ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার বেড়েছে ঠিকই কিন্তু তা স্বাভাবিক সময়ের কাছাকাছি নয়। হাই কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও এখনও অধরা প্রধানশিক্ষক সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ-সহ মূল অভিযুক্ত চার জন। তাঁদের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। নরেন্দ্রপুর থানার একাধিক টিম বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। স্কুলেও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরাতে নেমে পড়েছে প্রশাসন। স্কুলে বসেছে পুলিশি পাহারা। জয়েনপুর থেকে পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যে স্কুলে পৌঁছন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ঘটনার পর থেকে পলাতক স্কুলের প্রধানশিক্ষক ইমতিয়াজ। তিনি এ দিনও বিদ্যালয়ে আসেননি। বনহুগলির দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই সদস্য আকবর আলি খান এবং অলোক নাড়ু দু’জনেই এলাকাছাড়া। এফআইআরে নাম থাকা আরও এক অভিযুক্ত এবং স্কুলের পরিচালন কমিটির সদস্য মনিজুর রহমানকেও খুঁজছে পুলিশ। এঁরা প্রত্যেকেই বাড়িছাড়া বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিন আক্রান্ত এক শিক্ষিকা তাঁর মোবাইল ফোন জমা দেন নরেন্দ্রপুর থানায়। বারুইপুরের মহকুমাশাসক চিত্রদীপ সেন এবং সোনারপুরের বিডিও শিঞ্জিনী সেনগুপ্ত স্কুলে এসে আক্রান্ত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন।
মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছে এই স্কুলে। তা খতিয়ে দেখতেই এ দিন স্কুলে আসেন এসডিও এবং বিডিও। আক্রান্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তাঁরা জানান, আপাতত স্কুলের তত্ত্বাবধানে থাকবেন বিডিও। আদালতের নির্দেশমতো প্রশাসনের তত্ত্বাবধানেই হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা।