Narendra Modi

কিসান রেলের ‘ছদ্মনামে’ বঙ্গে ‘ভোট এক্সপ্রেস’-এর উদ্বোধন মোদীর

রেলের চাকা গড়াতে না গড়াতেই শুরু রাজনৈতিক তরজা। প্রশ্ন উঠছে, রাজধানীর উপকণ্ঠে কৃষক আন্দোলন যখন ৩৩ দিন পার করেছে, সেই পরিস্থিতি সামাল না দিয়ে বাংলাকে হঠাৎ কিসান রেলের আওতায় আনার প্রয়োজন হল কেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:২৯
Share:

সোমবার ট্রেনের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলার কৃষকদের মন পেতে এ বার কিসান রেল প্রকল্পে হাওড়াকে জুড়ে নিল কেন্দ্র। সোমবার মহারাষ্ট্রের সাঙ্গোলা থেকে শালিমার পর্যন্ত বিশেষ ট্রেনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ট্রেন ছাড়ার সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পর মোদীর যুক্তি, ‘‘রেলপথে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফসল পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত।’’

Advertisement

এই রেলের চাকা গড়াতে না গড়াতেই শুরু রাজনৈতিক তরজা। প্রশ্ন উঠছে, রাজধানীর উপকণ্ঠে কৃষক আন্দোলন যখন ৩৩ দিন পার করেছে, সেই পরিস্থিতি সামাল না দিয়ে বাংলাকে হঠাৎ কিসান রেলের আওতায় আনার প্রয়োজন হল কেন?

এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে একহাত নিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি যে বঙ্গ-আতঙ্কে ভুগছেন, এটা কি তারই ইঙ্গিত? প্রত্যেক বক্তৃতায় তাই বাংলাকে টেনে আনছেন। আজও একই কাজ করলেন আপনি। একটা কথা শুনে রাখুন। আগে কৃষক-বিরোধী কৃষি আইন প্রত্যাহার করুন। যত দিন পর্যন্ত তা না করতে পারছেন, তত দিন পর্যন্ত কৃষকদের ব্যাপারে অথবা তাঁদের উদ্দেশে কোনও মন্তব্য করবেন না’।

Advertisement

আরও পড়ুন: হোমগার্ডে বদলি ডায়মন্ড হারবারের সেই পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে​

ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আশ্বাস এবং বিতর্কিত ৩টি কৃষি আইনের প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে এই মুহূর্তে কৃষক আন্দোলনে উত্তপ্ত দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের একাংশ। সমঝোতায় আসতে ৩০ ডিসেম্বর ষষ্ঠ দফায় কৃষকদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কেন্দ্র। তার মধ্যেই সোমবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে কিসান রেলে প্রকল্পের ১০০তম কিসান ট্রেনটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

নয়া ট্রেনটির উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের কৃষকদের অভিনন্দন জানাই। কোভিড পরিস্থিতিতেও গত ৪ মাসে কিসান রেল নেটওয়ার্কের প্রসার ঘটেছে এবং এখন ১০০তম ট্রেনটি তাতে সংযুক্ত হল। কৃষকদের ক্ষমতায়ন এবং তাঁদের রোজগার বৃদ্ধিতে কিসান রেল একটা উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। ওই ট্রেনে হিমঘরের ব্যবস্থা থাকবে। তাতে নিরাপদে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ফলমূল, শাক-সবজি, দুধ, মাছ সরবরাহ করা যাবে।’’

এ ছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী কৃষি সম্পদ যোজনার আওতায় ফুড পার্ক, কোল্ড চেইন পরিকাঠামো, অ্যাগ্রো প্রসেসিং ক্লাস্টারের মতো সাড়ে ৬ হাজার ‘মেগা’ প্রকল্পের ঘোষণা করেন । মাইক্রো ফুড প্রসেসিং শিল্পের জন্য তাঁর সরকার মোট ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করছে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন: সরকার ‘খোলা মনে’ আলোচনায় রাজি, কৃষকদের আহ্বান কেন্দ্রের​

কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রী পীযূস গয়াল এবং কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরও ওই অনুষ্ঠানে অংশ দেন। তবে কিসান রেলের অবগুণ্ঠনে আসলে ২০২১-এর বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনকেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার পাখির চোখ করতে চাইছে বলে অভিযোগ বিরোধী শিবিরের রাজনীতিকদের। ডেরেকের টুইট থেকে তারই ইঙ্গিত মেলে। যদিও তাঁর এই কটাক্ষ নিয়ে কেন্দ্র বা বিজেপি নেতৃত্বের তরফে সোমবার এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনও সাফাই দেওয়া হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement