মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা মমতার। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির জন্য সরাসরি কেন্দ্রকে দায়ী করেছেন তাঁর মন্ত্রী। এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে তা তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নদীগুলির নাব্যতা কমে যাওয়াতেই জলধারণ ক্ষমতা কমেছে এবং তার জন্যই বার বার বাংলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, রাজ্যের সঙ্গে পরামর্শ না করে ডিভিসি নিজেদের ইচ্ছেমতো জল ছাড়ছে, সময় মতো পলি পরিষ্কার করছে না বলেও মোদীর কাছে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দোষারোপ পাল্টা দোষারোপের পালা চলছেই। তারই মধ্যে বুধবার মমতাকে ফোন করে পরিস্থিতির খোঁজ নেন মোদী। কোন জেলার কী অবস্থা, ক্ষয়ক্ষতি কত, জনের প্রাণহানি হয়েছে, তা জানতে চান মোদী। পরিস্থিতি সামাল দিতে কী কী পদক্ষেপ করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা হয় দু’জনের মধ্যে। সেই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে টুইটারে লেখা হয়, ‘বাঁধ থেকে ছাড়া জলে যে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, তা নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বন্যা কবলিত এলাকায় সকলে যাদে সুস্থ ও নিরাপদ থাকেন, তার জন্য প্রার্থনা করছেন প্রধানমন্ত্রী।’
টানা বর্ষণে দক্ষিণ বঙ্গের হাওড়া, হুগলি-সহ একাধিক জায়গায় বনযাপরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের জলমগ্ন ছবিও ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে মঙ্গলবার হাওড়া উদয়নারায়ণপুরে এক কিশোরীর মৃত্য়ুও হয়েছে। বাড়িঘর জলের নীচে চলে যাওয়ায়, স্কুলবাড়ি, ত্রাণ শিবিরে ঠাঁই নিয়েছেন বহু মানুষ। সেই সঙ্গে রয়েছে জলকষ্টও।
তার মধ্যেই বুধবার খানাকুল পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল মমতার। হেলিকপ্টারে তিনি বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করবেন বলে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে আপাতত সড়কপথে উদয়নারায়ণপুর যাচ্ছেন মমতা। তবে এ নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে।
প্রতিবছরই প্রবল বর্ষণে দক্ষিণবঙ্গের একটা বড় অংশ জলের নীচে চলে যায়। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমোন মহাপাত্র। কেন্দ্রীয় সরকার নদীর নাব্যতা নিয়ে উচ্চবাচ্য করছে না বলেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। যদিও রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির দায় কেন্দ্রের ঘাড়ে চাপানো অনুচিত বলে মত বিজেপি নেতৃত্বের।