মোট ২৯৪ আসনের একটি রাজ্যের একটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন। ভোট বাড়লেও আখেরে তৃতীয় স্থান। তাতেই অভিনন্দন বার্তা চলে এল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের।
বিধানসভার একটি উপনির্বাচনে তাঁর দল তৃতীয় হওয়ার পরে কোনও প্রধানমন্ত্রী মুখ খুলছেন, এমন নজির মনে করতে পারছেন না বিশেষ কেউ! বরং অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, কংগ্রেসের রাহুল গাঁধীকে বিজেপি নেতারা ঠাট্টা করতেন, তাঁর নাকি অংশগ্রহণেই আনন্দ! এখন গুজরাতে ধাক্কা খেয়ে মোদীরও কি সেই দশা হল? বিজেপি-র সাফল্য দেখাতে সবংয়ে তৃতীয় হওয়াকেও ঘটা করে তুলে ধরতে হচ্ছে?
প্রধানমন্ত্রী রবিবার টুইটে বলেছেন, ‘‘সবংয়ে বিজেপি-র উল্লেখযোগ্য ভোটবৃদ্ধিতে আমি খুশি। সমর্থনের জন্য মানুষকে ধন্যবাদ। পশ্চিমবঙ্গের সেবায় বিজেপি কোনও ত্রুটি রাখবে না। আমাদের কর্মীদের জন্য অকুণ্ঠ প্রশংসা।’’ একই সুরে বিজেপি সভাপতি শাহের টুইট, ‘‘জনবিরোধী তৃণমূল এবং পশ্চিমবঙ্গকে যারা ধ্বংস করেছে, সেই বামেদের বিকল্প হিসাবে বিজেপি দ্রুত উঠে আসছে। বাংলার মানুষের জন্য আমরা কাজ করব। আমাদের কর্মীদের প্রশংসা প্রাপ্য।’’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘কংগ্রেস আশা করি এ বার আর নৈতিক জয় দাবি করবে না! হিমাচল ও গুজরাতের পরে উত্তরপ্রদেশ, অরুণাচল ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষও ওদের প্রত্যাখান করেছেন।’’ উত্তরপ্রদেশের একটি এবং অরুণাচলের দু’টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে এ দিন জয়ী হয়েছে বিজেপি। তার সঙ্গেই সবংকে জু়ড়ে দিয়েছেন মোদী-শাহেরা।
গুজরাত ও হিমাচলের পরে এখন দুই বাম-শাসিত রাজ্য কেরল ও ত্রিপুরা এবং এ দিকে বাংলায় বিশেষ নজর বিজেপি-র। তারা ফলাও করেই বলছে, ‘এ বার লক্ষ্য বাংলা’। কিন্তু সেই লক্ষ্যের সঙ্গে সবংয়ে তৃতীয় হওয়ার বিশেষ সংযোগ কত দূর আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেই। রাজ্য বিজেপি-র এক নেতার কথায়, ‘‘জয় পরের কথা। এত দিন দ্বিতীয় হয়ে উচ্ছ্বাস দেখাতাম। এখন তৃতীয় হয়েও উল্লসিত হচ্ছি!’’
দলের অন্য একাংশের আবার পাল্টা যুক্তি, সবংয়ে চিরকালের আড়াই-তিন শতাংশ থেকে বিজেপি যে এ বার ১৮%-এ পৌঁছেছে, সেটা কম তাৎপর্যপূর্ণ নয়। আর কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যেখানে সবংয়ের ভোটে সামান্য তহবিল দিয়েও সাহায্য করেননি, সেখানে মোদী-শাহদের মন্তব্য বিজেপি কর্মীদের উৎসাহ বাড়াবে।
তবে ভোটের দিনে সবংয়ে বিজেপি-র ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর ‘অতি উৎসাহ’ আত্মসমীক্ষার পথ রুখে দেবে কি না, সেই জল্পনাও জারি হয়েছে দলে!