ছবি: পিটিআই।
২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বিজেপির ফৌজ যাতে সে রাজ্যে মন দিতে পারেন, সে জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। সাংসদরা কী করবেন, কী বলবেন, তা ঠিক করে দিতে দু’দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছিল বিজেপি। তার দ্বিতীয় দিনে লোকসভা-রাজ্যসভা মিলিয়ে ৩৮০ জন সাংসদের সামনে যে একটি মাত্র রাজ্যকে তুলে ধরে আজ আলোচনা হল, তা পশ্চিমবঙ্গ।
আজ একমাত্র বঙ্গ বিজেপির সভাপতি তথা রাজ্যের সাংসদ দিলীপ ঘোষকে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখতে বলা হয়। দু’দিনের অধিবেশনে যাতে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়, তার জন্য আলাদা করে সময়ও রাখা হয়েছিল। আজই অমিত শাহের লেখা ‘সাংস্কৃতিক রাষ্ট্রবাদ কে শিল্পী’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন রাজনাথ সিংহ এবং জে পি নড্ডা। তাতে চাণক্য, সাভারকর, দীনদয়ালের পাশাপাশি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের উপর অমিতের লেখা প্রবন্ধ রয়েছে। সংসদ অধিবেশন শুরুর পর থেকেই দলের নির্দেশে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা, কাটমানি-সহ নানা প্রশ্নে সরব হয়েছেন বিজেপি সাংসদরা। আজ দিলীপ দাবি করেন, বিজেপি করার ‘অপরাধে’ দলের কর্মীদের খুন করে গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার তত্ত্ব প্রচার করেছে প্রশাসন। অভিযোগ পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে না। বিজেপি নেতাদের দাবি, একাধিক বিজেপি সমর্থককে এ ভাবেই খুন করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে কর্মীদের প্রাণে না মারলেও তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফাঁসানো হচ্ছে মিথ্যা মামলায়। বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের দাবি, তাঁর নামেও খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, লোকসভার প্রচারে দলীয় নেতাদের হেলিকপ্টার নামতে না দেওয়া থেকে রথযাত্রায় প্রশাসনের আপত্তি— সবই তুলে ধরা হয় এ দিনের কর্মশালায়।
লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে দল কী ভাবে পাল্লা দিয়েছে, তা-ও শোনান দিলীপ। তাঁর দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে হারার ভয়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটেও ব্যতিক্রম হয়নি। বহু ক্ষেত্রে বুথে কর্মী দেওয়া যায়নি। তবু দল ১৮টি আসনে জিতেছে। লোকসভায় প্রাপ্ত ভোটের নিরিখেও ৪০ শতাংশের উপর ভোট পেয়ে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জানান, দলকে ওই অগ্রগতি ধরে রাখতে হবে। চালিয়ে যেতে হবে সদস্য সংগ্রহ অভিযান। সরকার-বিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র করলেই সাফল্য পাবে পদ্ম-শিবির।