গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
গৃহবন্দি থাকলে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা যাবে না। তবে বাড়িতে বসে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে কাজ করা যাবে। ৪ নেতা-মন্ত্রীর গৃহবন্দি হওয়ার রায় প্রসঙ্গে বললেন বিচারপতি।
৪ নেতা মন্ত্রীকে আপাতত গৃহবন্দি রাখার পক্ষেই রায় আদালতের। এ ব্যাপারে বৃহত্তর বেঞ্চে চূড়ান্ত শুনানি শুরু হবে দুপুর ২ টো থেকে।
নেতা-মন্ত্রীদের গৃহবন্দি করার বিরুদ্ধে আর্জি বৃহত্তর বেঞ্চে যাবে কি না তা নিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই রায় জানাবে আদালত
গৃহবন্দি করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন দুপুরেই শুরু করা হোক, আদালতে প্রস্তাব কল্যাণের। বললেন, ‘‘সিবিআই যদি আদালতকে ১৭ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার সময় শুনানির অনুরোধ জানাতে পারে, তবে আমরা বলতে পারব না কেন?’’
কল্যাণ বললেন, সবার আগে কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রাখতে হবে। ২৪ ঘন্টা করোনা সংক্রান্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন ফিরহাদ। কলকাতার মানুষ ফোন করলেও পদক্ষেপ করেন তিনি। ৭ দিনে ২৪ ঘণ্টাই এই কাজের মধ্যে থাকেন। তাই সব দিক বিচার করে সিদ্ধান্ত নিক আদালত।
আদালতকে কল্যাণ বললেন, ‘‘গোটা দেশ এই মামলায় নজর রাখছে। বিচারপতিদের উচিত এমন উদাহরণ তৈরি করা যাতে মানুষ বোঝেন বিচার ব্যবস্থা আসলে তাঁদেরই পক্ষে।’’
কোর্টে কল্যাণ ও তুষারের মধ্যে কথা কাটাকাটি। কল্যাণের প্রস্তাবে বাধা দিলে সলিসিটর জেনারেলকে তিনি বলেন, ‘‘আপনার যখন কথা বলছিলেন, তখন তো আমি বাধা দিই নি। আপনি আমার কথায় বাধা দিচ্ছেন কেন?’’
মামলা যদি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানো হয়। তবে আজই পাঠানো হোক। বিষয়টি দ্রুত সমাধান করতে হবে। আমরা চাই এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত হোক, আদালতকে বললেন তৃণমূল সাংসদ এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
সিঙ্ঘভি আদালতকে বললেন, ‘‘সাধারণ অভিযুক্তদের সঙ্গে এদের তুলনা করা হচ্ছে কেন? কোভিড পরিস্থিতিতে এদের দরকার।’’
বিচারপতি বললেন, জামিন নিয়ে মতভেদের কারণেই মাঝের সময়ে ৪ নেতাকে গৃহবন্দি করার প্রস্তাব।
সিবিআইয়ের আইনজীবীর কথায় সিঙ্ঘভির পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘একজন মন্ত্রীর পক্ষে সব কাজ বাড়িতে থেকে করা সম্ভব নয়। কোভিড পরিস্থিতিতে বাড়িতে বসে দফতরের ফাইল ছাড়বে কী করে?’’
ফিরহাদ না থাকায় কোভিড পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়ছে রাজ্য। জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানালেন, ‘‘গৃহবন্দি হলেও উনি তো বাড়িতে থেকে কাজ করতে পারবেন।’’
গ্রেফতারি তো গ্রেফতারিই। গৃহবন্দি করা হবে কেন? কোভিড পরিস্থিতিতে রাজ্যে ফিরহাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর অবর্তমানে অনেক জায়গায় স্যানিটাইজেশন করা যাচ্ছে না বলে আদালতকে জানালেন সিঙ্ঘভি।
৪ নেতা-মন্ত্রীকে গৃহবন্দি করার রায় দেওয়ার পর সাময়িক বিরতি নিয়েছিল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বিরতি শেষে ফের শুনানি শুরু। অভিষেক বললেন, ‘‘দুই বিচারপতির মধ্যে মতভেদ হলে, তৃতীয় বেঞ্চের কাছে যাওয়া উচিত বলে মনে করি।’’
জামিনের পক্ষে ছিলেন না কলকাতার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। তবে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জামিন মঞ্জুর করেন। শেষে গৃহবন্দি করার সিদ্ধান্ত।
আদালতে নেতা-মন্ত্রীদের আইনজীবীর প্রশ্ন, ‘‘এঁরা সিনিয়র মিনিস্টার। এঁদের কোথাও যাওয়ার দরকার নেই, তাহলে কেন গৃহবন্দি করার সিদ্ধান্ত?’’
গৃহবন্দি করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেন সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেহতা। উচ্চতর বেঞ্চে যাবেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।
সিবিআই জামিন বাতিলের আর্জি জানিয়েছিল আদালতে। কিন্তু হাই কোর্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করেনি। আদালত জানিয়েছে, সিবিআই কর্তাদের নজরদারির মধ্যেই থাকবেন অভিযুক্তরা।
সিবিআইয়ের নজরে গৃহবন্দি থাকতে হবে ৪ নেতা-মন্ত্রীকে। শর্তসাপেক্ষে জামিন।