Narada Scam

Narada Case: আইনের উপরে ভরসা না রেখে অরাজকতা তৈরি করছেন মমতা, অভিযোগ দিলীপের

তৃণমূল মনে করছে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। দলের একাংশের আশঙ্কা, বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনে পর্যুদস্ত হওয়ার পরে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২১ ১৫:২১
Share:

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

রাজ্যের মন্ত্রীদের গ্রেফতারের পরে পরেই নিজাম প্যালেসে সিবিআই ‌দফতরে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাঁকেও গ্রেফতারের দাবি নিয়ে মুখ খুললেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর ওই পদক্ষেপ আইনের উপর ভরসা না রাখা এবং ‘অরাজকতা’ তৈরির চেষ্টা। সোমবার দিলীপ বলেন, “আইন ও সংবিধানের উপরে ভরসা নেই বলেই মুখ্যমন্ত্রী অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করছেন।’’ একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “অতীতে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তদন্তের স্বার্থে সিবিআই তাঁদের ডেকেছিল। তখন আমরা রাস্তায় নামিনি। আইনের পথে হেঁটেছিলাম। এখন তৃণমূলেরও উচিত আইনের পথে যাওয়া।” মমতার নিজাম প্যালেসে চলে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে দিলীপের দাবি, “যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন তাঁরা দোষী বলেই মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছেন।”

Advertisement

নিজাম প্যালেসের বাইরে বিক্ষোভ নিয়ে দিলীপের বক্তব্য, “করোনা পরিস্থিতিতে এই ভাবে জমায়েতও বেআইনি। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সেই পথ দেখাচ্ছেন।” তৃণমূল ইতিমধ্যেই নারদ-কাণ্ডে শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায়কেও গ্রেফতারের দাবি তুলেছে। যার জবাবে দিলীপের বক্তব্য, ‘‘সেটা সিবিআই-এর বিষয়। তথ্যপ্রমাণ অনুযায়ী পদক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।’’ প্রসঙ্গত, সোমবার সিবিআই জানিয়েছে, অভিযোগ ওঠার সময় শুভেন্দু লোকসভার সাংসদ ছিলেন। লোকসভার অধ্যক্ষের অনুমতি এখনও মেলেনি। অন্য দিকে, মুকুলের নাম চার্জশিটে দেওয়ার মতো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছে সিবিআই।

ঘটনাচক্রে, রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও সোমবার জানিয়েছেন, তাঁর অনুমতি ছাড়াই তিন বিধায়ক— ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং মদন মিত্রকে গ্রেফতার করেছেন সিবিআই। এটা ‘বেআইনি’।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ভারত সরকারের ‘ইন্ডিয়া কোড’ বলছে, কোনও আইনসভার (সংসদ বা বিধানসভা) কোনও প্রতিনিধি গ্রেফতার থেকে ছাড় পেতে পারেন যখন সংশ্লিষ্ট আইনসভার অধিবেশন জারি থাকে। যা ব্রিটেনের ওয়েস্টমিনস্টার ব্যবস্থার অনুকরণে তৈরি। যেখানে বলা হয়েছে, আইনের চোখে সকলেই সমান। বলা হয়েছে, আইনসভার অধিবেশন চালু থাকার সময় কুৎসা, কটূক্তি বা আদালত অবমাননার দায়ে গ্রেফতার থেকে সুরক্ষা মিললেও মিলতে পারে। কিন্তু ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে নয়। এমনকি, আইনসভার অধিবেশন চালু থাকলেও নয়। স্পিকারের অনুমতি সৌজন্যবশত নেওয়া হয়ে থাকে। ভারত সরকারের ‘ইন্ডিয়া কোড’ অনুযায়ী এর কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। এবং ওই ‘কোড’ দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্যই বিধেয়।

‘ইন্ডিয়া কোড’ উল্লেখ করে বিজেপি নেতাদের একাংশ বলছেন, আইনসভার সদস্যদের সুরক্ষা দেওয়া যেতে পারে একমাত্র অধিবেশন চালু থাকাকালীন আইনসভার সদস্য হিসেবে। ফৌজদারি অপরাধ তার মধ্যে পড়ে না। আইনসভার বাইরে সংশ্লিষ্ট বিধায়কের কাজকর্মকেও ‘সুরক্ষা’ দেওয়া যায় না। বিজেপি-র এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘আইনসভার কোনও সদস্যকে গ্রেফতারের আগে স্পিকারের অনুমতি তখনই প্রয়োজন হয়, যখন সংশ্লিষ্ট বিধায়ক ওই আইনসভার কোনও কাজে ব্যাপৃত থাকেন।’’ উদাহরণ দিয়ে তাঁরা বলছেন, ‘‘বিধানসভার চত্বরে কোনও চা-চক্র যেমন আইনসভার কাজের অন্তর্গত নয়। সে ক্ষেত্রে সেখান থেকে আইনসভার কোনও সদস্যকে গ্রেফতার করতে গেলে স্পিকারের অনুমতির কোনও প্রয়োজন নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement