কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল ছবি।
নারদ মামলার শুনানি সোমবারের মতো স্থগিত হয়ে গেল। মঙ্গলবার সাড়ে ১১ টায় এই মামলার পরবর্তী শুনানি নারদ মামলার শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে আদালতের তরফে।
যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে সিবিআইয়ের আইনজীবীদের পাঠানো আবেদনের সব ফাইল আসেনি। অভিযুক্তদের আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা বিচারপতিদের জানান, আবেদনকারীদের পাঠানো নথির কোনও কপি তিনি পাননি।
মেহতা দাবি জমা করার পরই মজা করলেন বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। মেহতার উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘‘আপনার জমা দেওয়া আবেদনগুলো পেলাম। দেখে মনে হচ্ছে বেড়ে ওঠা শিশু। যেন দিন দিন বাড়ছে।’’
নারদ মামলা স্থানান্তরের জন্য হাই কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে সিবিআইয়ের দাবিগুলো জমা দিচ্ছেন কেন্দ্রের সলিসেটর জেনারেল তুষার মেহতা।
নারদ মামলা অন্যত্র স্থানান্তরের আবেদনকারীদের সচেতন হওয়ার আবেদন করলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। তিনি বলেছেন, ‘‘আবেদনকারীদের আরও সচেতন হতে বলব। কারণ আমরা এর বিতর্কের দিকগুলো তুলে ধরেছি। তাঁরা পরে বলতে পারবে না আমরা আশ্চর্য হয়েছি। আমি বেঞ্চকে উপযুক্ত বলে মনে করি। এবং বিষয়গুলি উত্থাপন করতে বলছি।’’
বলার জন্য আবেদন জানালেন কেন্দ্রের সলিসেটর জেনারেল তুষার মেহতা। বিচারপতিদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘‘সমস্ত বিষয় আমি বলছি। আমাকে বলতে দেওয়া হোক। শেষ ৪৫ মিনিট ধরে অন্য বিষয় বলা হচ্ছে।’’
মামলা না শোনার আবেদনে বিরক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। তিনি বলেছেন, ‘‘আধ ঘণ্টার বেশি সময় হয়ে গেল এটা নিয়ে বলে যাচ্ছেন। আমরা তো বিষয় শুনব বললাম। তার পরও আপনি আদালতের সময় নষ্ট করছেন। আপনি যদি তাই চান করুন।’’
বিচারপতি হরিশ টন্ডন: এখন আপনার সমস্যা শুনে আমরা পিছিয়ে যেতে পারব না। যদি এই মামলা শুনানিতে আদালতের এক্তিয়ারে আঘাত হয়। তা আমরা বিচার করব। তার পর আপনি দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন।
বিচারপতি সৌমেন সেন: সুপ্রিম কোর্টে শুনানির আগে এখানে এই মামলার শুনানি হয়েছে। এখন আপনি এসেছেন এবং বেঞ্চের দক্ষতা নিয়ে কথা বলছেন। সুপ্রিম কোর্টে আপনার বলা উচিত ছিল— আমরা ৫ বিচারপতির এক্তিয়ারকে চ্যালেঞ্জ করব।
কিশোর দত্ত: আমাকে ক্ষমা করবেন। আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে বলছি এই মামলা এই আদালত শুনতে পারে না।
সওয়াল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়। বিচারপতিদের বৃহত্তর বেঞ্চ জানায়, নিজেদের মধ্যে লড়াই করবেন না। আমরা সমস্ত বিষয় শুনব। সমস্ত বিষয় যখন উঠেছে, সব পক্ষের বক্তব্যই শোনা হবে। আমাদের বিচারে, আপনাদের সমস্ত বিরোধিতার কথা শুনব।
প্রথমে সওয়াল করার সুযোগ পেয়ে তিনটি বিষয় তুলে ধরেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত।
প্রথমত, ১৭ মে ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি না শুনেই রায় দিয়েছিল।
দ্বিতীয়ত, ফৌজদারি মামলা এই আদালত অন্যত্র স্থানান্তর করতে পারে না।
তৃতীয়ত, ডিভিশন বেঞ্চের বিষয় পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ শুনতে পারে না।
নারদ মামলায় রাজ্যের হয়ে সওয়াল করছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। মামলা শুরু হতেই তিনি বিচারপতিদের কাছে প্রথমে বলার জন্য আবেদন করেছেন। কিশোর বলেছেন, ‘‘আমাকে প্রথম বলতে দিন।’’
কেন্দ্রের সলিসেটর জেনারেল তুষার মেহতা অন্য কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। তাই নারদ মামলার শুনানি পিছিয়ে গেল। শুনানি ফের শুরু হবে দুপুর দু’টোয়।