সুনীল তখন বিজেপিতে।—ফাইল চিত্র
ঘটা করে বিজেপি-তে এসেছিলেন। এখন আচমকা দাবি করছেন, ‘‘তৃণমূলেই তো আছি, বিজেপি-তে কবে গেলাম!’’ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি-র ওয়েবসাইট বলছে, সুনীল এখনও গেরুয়া বাহিনীতে আছেন। দলের টিকিটে ভোটে জেতা ১৮ জন সাংসদের পরে ১৯তম নামটি সুনীলের। শুধু নাম নয়, সেই সঙ্গে ঠিকানা-সহ ছবিও।
গত বছর ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় প্রকাশ্যে বিজেপি-তে যোগ দিতে দেখা গিয়েছিল সুনীল মণ্ডলকে। সেই সময়ে গেরুয়া শিবিরের পক্ষে দাবি করা হয়েছিল, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেই তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে এসেছেন সুনীল। এর পরে ভোট-পর্বে খুব যে গেরুয়া শিবিরের হয়ে গলা ফাটিয়েছেন তা কিন্তু নয়। তবে বিজেপি-র ওয়েবসাইটে (bjpbengal.org) তাঁর নাম উঠে যায় যোগদানের পরে পরেই। দলের সাংসদ তালিকায় ক্লিক করলে সোমবার সন্ধ্যাতেও জ্বলজ্বল করছেন সুনীল।
সুনীল এখনও গেরুয়া। বলছে বিজেপি-র ওয়েবসাইট গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বিজেপি-তে যোগ দেওয়ায় ইতিমধ্যেই সুনীলের বিরুদ্ধে লোকসভার স্পিকারের কাছে দলত্যাগ-বিরোধী আইন কার্যকরের আবেদন করেছে তৃণমূল। এ নিয়ে অনেক বিতর্কও হয়েছে। কিন্তু সোমবার রাজনৈতিক মহলকে হতভম্ব করে দিয়ে সংসদে তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে একযোগে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন সুনীল। ফোনে আড়ি পাতা নিয়ে কেন্দ্রকে জবাব দিতে হবে বলে সকলের সঙ্গে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভও দেখান। তা নিয়ে প্রশ্ন করলে সংবাদমাধ্যমে সুনীল বলেন, ‘‘আমি তো তৃণমূলেই আছি! কখনও পদত্যাগই করিনি। আমি তৃণমূলে ছিলাম, আছি এবং আগামী দিনেও থাকব। তৃণমূলের সকলের সঙ্গে কাজ করছি। পেগাসাস নিয়েও প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমাদের নেত্রী তো দীর্ঘ দিন ধরেই এর বিরুদ্ধে সরব। এ ভাবে ফোনে আড়ি পাতার অর্থ ব্যক্তিগত সত্ত্বায় আঘাত হানা। কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত কথা বলব, সুখ-দুঃখের কথা ভাগ করে নেব, সেখানে নজরদারি চালানো চরম অন্যায় কাজ।’’
তবে সুনীলের এই ‘প্রত্যাবর্তন’ একেবারে আকস্মিক ছিল না। বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি-র ভরাডুবির পর থেকেই তিনি বেসুরো গাইছিলেন। সম্প্রতি বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফেরা মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎও হয়। তাঁর বিরুদ্ধে স্পিকারের কাছে তৃণমূলের নালিশ প্রসঙ্গে সুনীলের বক্তব্য, ‘‘পুরোটাই ভুল বোঝাবুঝি। সুদীপদা জানতে চেয়েছিলেন, আমি কোথায় আছি। একটু মান-অভিমান হয়েছিল। ও সব আর নেই। জানিয়ে দিয়েছি, তৃণমূলেই আছি এবং থাকব।’’ কিন্তু বিজেপি সম্ভবত এত তাড়াতাড়ি সুনীলের রং বদলের সম্ভাবনা আঁচ করতে পারেনি। তাই সাংসদ সুনীল এখন একই সঙ্গে তৃণমূলে এবং বিজেপি-র ওয়েবসাইটে।