নেতাজি ইন্ডোরে ফুটবল হাতে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।
হুইল চেয়ারে বসে ফুটবল ছুড়ে দিচ্ছেন তিনি। তাতেই কাড়াকাড়ি পড়ে যেত মুহূর্তের মধ্যে। ছেলে, পুরুষ, মহিলা, বল ধরতে ছুটে যেতেন সকলেই। আদ্যোপান্ত রাজনৈতির সেই ‘খেলা’কেই এ বার পাকাপাকি ভাবে বাঙালির জীবনে প্রতিষ্ঠা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘খেলা হবে’ দিবসের সূচনা করলেন তিনি। আর সেই মঞ্চ থেকে প্রচারের সময়কার ভঙ্গিতেই বল ছুড়ে দিলেন দর্শকের দিকে।
১৯৮০ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ ঘিরে সঙ্ঘর্ষ বাধে। তাতে ১৬ জনের মৃত্যু হয়। ওই দিনটির স্মরণেই ‘খেলা হবে’ দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা করেন মমতা। তার সূচনা করে ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে থাকা ক্লাবগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মমতা। জার্সি এবং ১ লক্ষ ফুটবলও উপহার দেওয়া হয়।
তবে ক্রীড়াপ্রেমী বাঙালিকে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান আবেগে বাঁধলেও, এই মঞ্চ থেকেই মমতার রাজনৈতিক লক্ষ্য আরও স্পষ্ট হয়ে ধরা দিয়েছে বলে একমত রাজনৈতিক মহল। নেতাজি ইন্ডোরে সোমবার মমতা বলেন, ‘‘খেলা ছাড়া জীবন চলে না। খেলার মধ্য দিয়েই ঐক্য, সম্প্রীতি, সংহতি, সুস্বাস্থ্য এবং সভ্যতা গড়ে ওঠে।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘এই খেলা হবে কর্মসূচিকে কার্যকর করতে হবে। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যেখানেই যেতাম, চিৎকার শুরু হয়ে যেত খেলা হবে, খেলা হবে। বাংলার মানুষ খেলা হবে স্লোগানকে ভালবেসে ফেলেছেন। এখন তো দেশের সংসদেই খেলা হবে রব উঠছে। স্লোগান শোনা যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানেও। গোটা দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে খেলা হবে স্লোগান।’’
এর আগে, ২১-এর মঞ্চে বাংলার বাইরে ‘খেলা হবে’ স্লোগানকে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছিলেন মমতা। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে হটাতে দেশ জুড়ে ‘খেলা’র ডাক দেন তিনি। সোমবারও একই সুর ধরা পড়ে তাঁর গলায়। মমতা বলেন, ‘‘খেলা কিছুটা হয়েছে। আরও হবে। দেশ জুড়ে খেলা হবে। বাংলা পথ দেখিয়েছে। আগামী দিনে গোটা দেশে খেলা হবে। আর এই খেলা এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আপনাদেরই।’’