তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা থেকে বাদ পড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের পুত্র পঙ্কজ ঘোষ। মঙ্গলবার রাত ৮টার পর কোচবিহারের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে তৃণমূল। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ, এই ৩টি স্তরেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায়, দলের বহু পুরনো মুখ এ বার বাদ পড়েছেন। জেলা পরিষদের বেশ কিছু আসনে আনা হয়েছে নতুন মুখ। এ বার কোচবিহার জেলা পরিষদের যে ২৪ জন তৃণমূল নেতার নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন কোচবিহারের পুরসভার চেয়ারম্যান তথা রাজ্য তৃণমূলের সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের পুত্র পঙ্কজ ঘোষ। তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে, তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী শুচিস্মিতা দেব শর্মার নামও।
কোচবিহার জেলা পরিষদে ৩৩টি আসন থাকলেও এ বার ১টি আসন বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ, এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের মোট ৩৪টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সেখানে। মঙ্গলবারের তালিকায় ৩৪টি আসনের মধ্যে ২৬ নম্বর আসনটি বাদ থাকায় বুধবার পুনরায় ২৬ নম্বর আসনে প্রার্থিতালিকা অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করে জেলা তৃণমূল। এই ৩৪ জনের মধ্যে অধিকাংশই নতুন মুখ বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দেব ভৌমিক। তবে পঙ্কজের নাম কী কারণে বাদ পড়ল, এই প্রশ্নের উত্তরে কিছু বলতে চাননি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। মুখে কুলুপ এঁটেছেন তাঁর বাবা রবীন্দ্রনাথ ঘোষও। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে পঙ্কজ জেলা পরিষদের ২৮ নম্বর আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু এ বছর তাঁকে ১৭ নম্বর আসন থেকে দাঁড় করানো হতে পারে জল্পনা ছড়িয়েছিল। কিন্তু ওই আসনে এ বার টিকিট দেওয়া হয়েছে আব্দুল জলিল আহমেদকে।
পঙ্কজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, “দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা সঠিক। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমি যে আসনটিতে দাঁড়িয়েছিলাম, সেই আসনটিতে অন্য প্রবীণ নেতাদের নাম উঠে আসায় তাঁদেরকেই টিকিট দেওয়া হয়েছে।” দলের সিদ্ধান্তের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে এখানে দলের কোনও ভুল বোঝাবুঝি নেই। আমার আসনে যাঁকে দাঁড় করানো হয়েছে, তাঁর প্রতিও ক্ষোভের কারণ নেই।” তাঁর জায়গায় যোগ্য লোককেই প্রার্থী করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন পঙ্কজ। পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের হয়ে প্রচারে নামবেন বলও আগেভাগে জানিয়ে দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ-পুত্র।
পঙ্কজর নাম বাদ পড়ার কারণ জানতে চাইলে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অবশ্য বলেন, “জেলা পরিষদের প্রার্থিতালিকায় অধিকাংশই এ বার নতুন মুখ।” এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “কে কোথায় প্রার্থী হবেন, পুরোটাই রাজ্য স্তর থেকে স্ক্রুটিনি করে আমাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা সেটাই প্রকাশ করেছি। যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর আদর্শ ও ত্যাগের কথা মাথায় রেখে দল করছেন, যাঁদের জনসংযোগ ভাল, তাঁদেরই টিকিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দ়ল।” পঙ্কজের আসনটি সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ার কারণেই তাঁকে প্রার্থী করা যায়নি বলে জানিয়েছেন জেলা সভাপতি।