ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউস থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করে নাগরিক মঞ্চ। — পিটিআই।
করুণাময়ীর প্রতিবাদে আবারও পথে নেমে আন্দোলন। শুক্রবারের পর শনিবারও প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল নাগরিক মঞ্চের। মধ্যরাতে চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান বিক্ষোভ যে ভাবে পুলিশ তুলে দিয়েছে, তা নিয়ে সরব হয়ে ধর্মতলায় ওই মিছিলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে পা মেলালেন বাম নেতা বিমান বসু, কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান-সহ অনেকে। সামনের সারিতে ছিলেন অভিনেতা বাদশা মৈত্র, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, পরিচালক অনীক দত্ত-সহ বিশিষ্টজনেরা।
শনিবার বিকেলে ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউস থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করে নাগরিক মঞ্চ। সকলের হাতেই ছিল প্ল্যাকার্ড। মুখে স্লোগান। প্রতিবাদে পথে নামা ওই বিশিষ্টজনেদের দাবি, মিছিলের কোনও রাজনৈতিক রং নেই।
মিছিলের একেবারে পিছনে ছিলেন বিমান, আব্দুলেরা। কেন পিছনে, তার জবাবে বিমান বলেন, ‘‘এই ধিক্কার মিছিলের ডাক দিয়েছেন নাগরিক সমাজের বিশিষ্টজনেরা। আমরা তাঁদের সমর্থন জানিয়েছি। সমর্থন যাঁরা করেন, তাঁরা সামনে থাকবেন কেন? তাঁরা পিছনে হাঁটবেন। তাই আমরা পিছনে হাঁটছি।’’
তার পরেই করুণাময়ীর ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেন বিমান। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাধীনতার পর এ রকম ঘটেনি। ২০১৪ সালে পরীক্ষা হয়েছে। ২০২২ সালেও তার ফল বার হয়নি।’’
‘বাম-ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত অভিনেতা বাদশা দাবি করেন, এই মিছিলের নেপথ্যে কোনও রাজনৈতিক দল নেই। তাঁর কথায়, ‘‘এটা রাজনীতির বিষয় নয়। চাকরিপ্রার্থীদের সমর্থনে রাস্তায় নামাটাই স্বাভাবিক। সব মানুষ পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।’’ প্রতিবাদ মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের আচরণ যত বাড়াবে সরকার, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ তত বাড়বে।’’
গত সোমবার থেকে করুণাময়ীতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরের সামনে চাকরির দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ করছিলেন টেট উত্তীর্ণ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্তেরা। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তাঁদের ‘জোর করে’ হঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। আন্দোলনকারীদের ধাপে ধাপে আটকও করা হয়। তাঁদের সেখান থেকে বাসে করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক জন আন্দোলনকারী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ঘটনাস্থলে ছিল র্যাফ এবং পুলিশের বিশাল বাহিনী। এ সবের বিরুদ্ধে শুক্রবার প্রতিবাদে নামে বাম এবং বিজেপি। শনিবার আবারও নাগরিক সমাজের প্রতিবাদের সাক্ষী হল কলকাতা।