Aditya-L1 Mission

‘আদিত্য’ ঠিক পথে কি, নজর বরুণদের

আগামী ২ সেপ্টেম্বর শ্রীহরিকোটা থেকে পিএসএলভি রকেটে সওয়ার হয়ে সূর্যের দিকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার এগিয়ে গিয়ে ছোট একটি কক্ষপথে পাক খেতে শুরু করবে মহাকাশযানটি।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

বীরনগর  শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৫২
Share:

বরুণ বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র।

রকেটে সওয়ার মহাকাশযান ঠিক পথে, ঠিক লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করাই ওঁদের কাজ। সে সদ্য চাঁদে পৌঁছনো ‘চন্দ্রযান-৩’ হোক বা আগামী শনিবার সূর্যের দিকে চোখ রেখে ওড়া ভারতীয় মহাকাশযান ‘আদিত্য-এল ওয়ান’। সেই কাজটি যে দল করে, তারই সদস্য বরুণ বিশ্বাস। নদিয়ার বরুণ আপাতত ফিজি-তে বসে ইসরোর সহকর্মীদের সঙ্গে আদিত্যের প্রাক্-উৎক্ষেপণ প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত।

Advertisement

আগামী ২ সেপ্টেম্বর শ্রীহরিকোটা থেকে পিএসএলভি রকেটে সওয়ার হয়ে সূর্যের দিকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার এগিয়ে গিয়ে ছোট একটি কক্ষপথে পাক খেতে শুরু করবে মহাকাশযানটি। সেখান থেকে সৌরমণ্ডল সম্পর্কে নানা তথ্য সংগ্রহ করবে। এই গোটা যাত্রাপথ যাঁরা নিয়ন্ত্রণ করবেন, নদিয়ার বরুণ তাঁদের এক জন।

বরুণ জানাচ্ছেন, উৎক্ষেপণের সময় থেকে রকেট তথা মহাকাশযান অভিপ্রেত কক্ষপথে যাচ্ছে, না কি সামান্য হলেও বিচ্যুতি হচ্ছে, সে দিকে সারাক্ষণ নজর রাখা হয়। তেমন কিছু ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে বিশেষ নির্দেশ পাঠিয়ে তাকে কক্ষপথে ফিরিয়ে আনা হয়। তার জন্য শ্রীহরিকোটা, আন্দামান, ব্রুনেই, ফিজি ও লস এঞ্জেলসে বসে ইসরোর পাঁচটি দল এই কাজটি করে। চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণের সময়েও তাঁরা এই নিয়ন্ত্রণ রক্ষার কাজ করেছিলেন।

Advertisement

বরুণ এখন রয়েছেন দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে দ্বীপরাষ্ট্র ফিজি-তে, ইসরোর দলটির সঙ্গে। বুধবার সেখান থেকেই ফোনে তিনি বলেন, “চন্দ্রযান-৩ ও বিক্রম ল্যান্ডারের ট্র্যাকিংয়ের জন্য ব্যবহৃত ১৮এম ডিপ স্পেস টেলিমেট্রি এবং ট্র্যাকিং নেটওয়ার্ক অ্যান্টেনা তৈরির দায়িত্বে ছিলাম আমি। ওই অ্যান্টেনা রিফ্লেক্টর সিস্টেমে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি ইসরোর তরফে পেটেন্টও করা হয়েছে।”

আদতে নদিয়ার বীরনগর লাগোয়া গ্রাম কামগাছির বাসিন্দা বরুণ। বাবা জহরলাল বিশ্বাস হোমগার্ডের চাকরি করে দুই ছেলেকে পড়িয়েছেন। মা সরস্বতী নিম্নবিত্ত সংসারের হাজার হ্যাপা মুখ বুজে সামলেছেন। বরুণ মেক্যানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বি-টেক করে ইসরোয় যোগদান করেন। বাবার কথায়, “ফার্স্ট-সেকেন্ড না হলেও ওর ছোট থেকেই যন্ত্রপাতির দিকে ঝোঁক। এটা খুলে ওটা জুড়ে নিত্যনতুন জিনিস তৈরি ছিল ওর নেশা।” ছোটবেলার বন্ধু প্রসেনজিৎ গুহ বলেন, “মোবাইল তখন সবে এসেছে। তখনই মোবাইল ব্যবহার করে ও বাড়ির আলো-পাখা চালানোর ব্যবস্থা করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল!”

বিক্রমের সফল অবতরণের পর এ বার আর একটি মাহেন্দ্রক্ষণের প্রতীক্ষা শুরু হয়েছে। বরুণের কথায়, “সূর্যের সবচেয়ে বাইরের স্তরের (করোনা) আবহাওয়া, উত্তাপের উৎস, প্রকৃতি ও আচরণ বা সৌরঝড় সম্পর্কিত বহু তথ্য পাওয়া যাবে আদিত্য-এল ওয়ান থেকে। এই অভিযান সফল হলে ভারত মহাকাশ গবেষণার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement