নদিয়ার তৃণমূল নেতা মতিরুল ইসলামকে খুনের অভিযোগে ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে নানা প্রশ্নের উত্তর পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। —ফাইল চিত্র।
নদিয়ার তৃণমূল নেতা মতিরুল ইসলামকে খুনের অভিযোগে বেঙ্গালুরু থেকে ধৃত জাকির শেখ এবং রবিউল শেখকে ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠাল আদালত। মঙ্গলবার তাঁদের আদালতে হাজির করে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করেছিল নওদা থানার পুলিশ। তবে বহরমপুর জেলা আদালতের বিচারক ধৃতদের ৭ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, মতিরুল খুনের মামলায় বেঙ্গালুরু থেকে ধৃত জাকিরের বাড়ি থানারপাড়া থানা এলাকার পরানপুর গ্রামে। অন্য দিকে, রবিউলের বাড়ি ওই থানা এলাকার টোপলা আখড়া পাড়ায়। ধৃতেরা দীর্ঘ দিন ধরেই কর্নাটকে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। তবে আজকাল নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করলেও বছর তিনেক আগের একটি খুনের ঘটনায় তাঁদের নাম উঠে এসেছিল। সে সময় পুলিশের গ্রেফতারি এড়াতে এলাকা থেকে গা-ঢাকা দেন বেশ কয়েক জন। তাঁদের মধ্যে এই দু’জন যুবকও ছিলেন বলে অভিযোগ।
স্থানীয় এলাকায় সুপারি কিলার এবং বাংলাদেশি ভাড়াটে খুনিদের সঙ্গে ধৃতদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলেও পুলিশ সূত্রে দাবি। মতিরুল খুনে দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্তকারী দলের সূত্রে মারফৎ আরও দাবি, খুনের ঘটনায় সরাসরি যোগ ছিল এঁদের। খুনের দিন ঘটনাস্থল অর্থাৎ শিবনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ধৃত যুবকদের উপস্থিতির বিষয়ে কার্যত নিশ্চিত পুলিশ।
বেঙ্গালুরু থেকে তাঁরা কী ভাবে সেখানে পৌঁছেছিলেন, ক’দিন আগেই বা তাঁরা ফিরেছিলেন, স্থানীয় কে বা কারা তাঁদেরকে এখানে আসার বিষয়ে সাহায্য করেছিলেন, এখানে এসে কোথায় আত্মগোপন করেছিলেন তাঁরা, তাঁদের টাকাপয়সা কে বা কারা জোগাড় করেছিলেন— ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এ সব প্রশ্নের উত্তর পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিংহের দাবি, ‘‘ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি তদন্ত শেষ হবে।’’ যদিও মতিরুলের স্ত্রী রিনা বিশ্বাস খাতুনের পাল্টা দাবি, ‘‘তদন্তকে অন্য পথে পরিচালিত করতে চাইছে পুলিশ। আমার স্বামী যাঁদের কাছ থেকে খুনের আশঙ্কা করতেন, তাঁদের নাম এফআইআরে জানিয়েছি। আমি নিশ্চিত, সিআইডি তদন্ত হলে আসল সত্য প্রকাশিত হবে।’’