আদিবাসীদের অধিকার সুরক্ষায় সাগরদিঘিতে এবার নিজেরাই সক্রিয় হল এলাকার আদিবাসী যুবকেরা। মঙ্গলবার এলাকার কয়েকশো আদিবাসীর উপস্থিতিতে সভা করে গড়া হল আদিবাসী অধিকার রক্ষা কমিটিও। সভায় হাজির ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি ওবাইদুর রহমান।
জেলায় প্রায় ২০ হাজার আদিবাসীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় আদিবাসীর বাস সাগরদিঘিতে। ৩২টি আদিবাসী গ্রাম রয়েছে ওই ব্লকে। অথচ সচেতনতার অভাবে তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। এমনটাই দাবি করলেন সদ্য গড়ে ওঠা আদিবাসী অধিকার রক্ষা কমিটির সম্পাদক অন্তন হেমব্রম। তিনি বলেন, “মূলত আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ নানা রকম সরকারি বরাদ্দ, সুবিধা পাওয়ার ব্যাপারে গ্রামে গ্রামে আদিবাসীদের সচেতন করবে এই কমিটি।”
অনেকেরই ‘উপজাতি শংসাপত্র’ নেই। নিয়মিত ১০০ দিনের কাজ পাওয় যায় না। আদিবাসী গ্রামগুলির রাস্তাঘাট এমনই বেহাল যে যাতায়াত করা যায় না। এ সব নিয়েই সচেতন করা হবে আদিবাসিদের প্রতিটি গ্রামে গিয়ে। আদিবাসিদের অধিকার সচেতনতার লড়াইকে স্বাগত জানিয়েছেন আদিবাসীদের সামাজিক সংগঠনের জেলা সম্পাদক জামিন হাঁসদা। তিনি বলেন, “দুর্বল অর্থনৈতিক বুনিয়াদের জন্যই আমরা শিক্ষায় পিছিয়ে পড়ছি। শিক্ষার অভাবে স্কুল, কলেজ, উচ্চশিক্ষা সর্বত্রই আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত আসন পূরণ হচ্ছে না। মেডিক্যালে ভর্তির ক্ষেত্রে সংরক্ষিত আসনের ৯৯ শতাংশ আসন খালি রয়েছে। চাকরির ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। তাই আদিবাসীদের স্বার্থরক্ষায় কোনও সংস্থা এগিয়ে এলে তা অবশ্যই সমাজের পক্ষে শুভলক্ষণ।” তিনি জানান, সর্বাগ্রে দরকার তাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন। এর জন্যই সামাজিক সংগঠন কিছু কর্মসূচী নিয়েছে। ঠিক করা হয়েছে জেলায় ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী আদিবাসীদের নিয়ে ১০০টি আদিবাসি স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করা হবে। প্রত্যেককে প্রতি মাসে ১৩০ টাকা করে জমাতে হবে ব্যাঙ্কের পাশ বই খুলে। এছাড়াও প্রত্যেক পরিবারের জন্য একটি করে ব্যাঙ্ক একাউন্ট খুলতে হবে যাতে বছরে অন্তত ৫০০টাকা জমাতে হবে। বহু আদিবাসী পরিবার এখনও বিপিএলের বাইরে। সে জন্য প্রশাসনিক গাফিলতি ও উপেক্ষাও কম দায়ী নয়।