বেলডাঙা পুরসভার চারটি স্ট্যান্ডিং কমিটি ভেঙে দেওয়া হল। বুধবার বিষয়টি কাউন্সিলরদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন পুরপ্রধান কংগ্রসের অনুপমা সরকার। তিনি বলেন, “জেলা কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব আমার কাছে প্রতিনিধি পাঠিয়ে এই নির্দেশ কার্যকরী করতে বলেছেন। সেই নির্দেশ পাওয়ার পরে মঙ্গলবার পাঁচটি স্ট্যান্ডিং কমিটির মধ্যে চারটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ওই চারটি কমিটি এখন আমি নিজে দেখাশোনা করব।” তবে আচমকা এই স্ট্যান্ডিং কমিটি ভেঙে দেওয়ায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভার একাংশের মতে, কংগ্রেসেরই চার বিক্ষুব্ধ সদস্যকে চাপে রাখতে এমন সিদ্ধান্ত।
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে বেলডাঙা শহর কংগ্রেসের সভাপতি তথা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ভরত ঝাওরকে পানীয় জলের স্ট্যান্ডিং কমিটির দায়িত্বে আনা হয়েছে। ওই পদে আগে ছিলেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর বিশ্বনাথ মণ্ডল যিনি পুরপ্রধানের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত। বিশ্বনাথবাবু এখনও পুরসভার দলনেতা। তবে দলীয় সূত্রে খবর, আগামী বোর্ড মিটিংয়ে ওই পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। এ দিন বিশ্বনাথবাবু বলেন, “কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই এই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এর বেশি কিছু বলব না।”
তবে পুরপ্রধান তাঁর বিশ্বস্ত মহলে জানিয়েছেন, কংগ্রেসের টিকিটে জিতে দলেরই বিরোধিতা করছিলেন তিন কাউন্সিলর। তাঁরা উন্নয়নের কাজেও বাধা দিচ্ছিলেন। সেই কথা জানতে পেরে কংগ্রেসের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী সিপিএমের শীলা ঘোষ বলেন, “এসব কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দের ফল। আমরা জানতে পেরেছি কংগ্রেসের ৪ থেকে ৫ জন কাউন্সিলর বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চলেছে।” বেলডাঙা পুরসভার মোট সদস্য ১৪ জন। তার মধ্যে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর রিম্পা দাস শারীরিক সমস্যার কারণে আগেই পদত্যাগ করেছেন। সেখানে দীর্ঘ দিন ধরে ভোটের দাবি করা হলেও এখনও পর্যন্ত ভোট হয়নি। বাকি ১৩ জন সদস্যের মধ্যে ৯ জন কংগ্রেসের, ৩ জন বামফ্রন্টের ও ১ জন বিজেপির। প্রকাশ্যে তেমন কিছু না বললেও পুরসভার এই অবস্থার সুযোগ নিতে মুখিয়ে রয়েছে বিজেপি, বামফ্রন্ট ও তৃণমূল। পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির কাউন্সিলর অলোক ঘোষ বলেন, “বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা আমার সঙ্গে দেখা করেছন। আমরা গোটা বিষয়টির উপরেই নজর রাখছি।” তবে এমন সম্ভবনার কথা মানতে নারাজ কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, “এটা সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত। এলাকার বাসিন্দাদের আরও ভাল পরিষেবা দিতে এই পদক্ষেপ। এর বাইরে বেশি কিছু ভাবার কোনও কারণ নেই।”