শিয়রে পুজো, বৃষ্টি উপেক্ষা করেই বাদকুল্লায় প্রস্তুতি তুঙ্গে

পুজোর আর বেশি দিন বাকি নেই। এর মধ্যে সেরে ফেলতে হবে যাবতীয় কাজ। ছিনিয়ে আনতে হবে সেরার শিরোপাটা। তাই রোদ-বৃষ্টির খেলার মাঝে পুজোর প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখছেন না বাদকুল্লার পুজো উদ্যোক্তারা। বৃষ্টি শুরু হলেই চলছে দৌড়ে গিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়া।

Advertisement

সৌমিত্র সিকদার

বাদকুল্লা শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৫৬
Share:

পুজোর আর বেশি দিন বাকি নেই। এর মধ্যে সেরে ফেলতে হবে যাবতীয় কাজ। ছিনিয়ে আনতে হবে সেরার শিরোপাটা। তাই রোদ-বৃষ্টির খেলার মাঝে পুজোর প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখছেন না বাদকুল্লার পুজো উদ্যোক্তারা। বৃষ্টি শুরু হলেই চলছে দৌড়ে গিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়া। আবার একটু থামলেই চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ। এলাকার মণ্ডপে মণ্ডপে ঢুঁ মারলেই ধরা পড়ছে এই চিত্র। কাজের তালিকাও নেহাত কম নয়। মণ্ডপ তৈরির কাজ থেকে বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাঁদা তোলা সবই চলছে জোরকদমে।

Advertisement

এলাকার বিভিন্ন মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে যে চিত্র পাওয়া গেল তা কলকাতার থিম পুজোরগুলোর চেয়ে কোনও অংশে কম যায় না। মাঠের এক পাশে ৮০ ফুট উঁচু ও ১২০ ফুট চওড়া মায়ানমারের বৌদ্ধ প্যাগোডার অনুকরণে তৈরি হচ্ছে অনামী ক্লাবের পুজো মণ্ডপ। কাপড়, ফাইবার, প্লাইউডের তৈরি এই মন্দিরের ভেতরের অংশ সাজানো হবে রুদ্রাক্ষ ও তুলসির মালা দিয়ে। থাকবে ঝাড়বাতি, চন্দননগরের আলোকসজ্জা, জরির সাজের প্রতিমা।

কোষাধ্যক্ষ হিমাদ্রী পাল বলেন, “জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে পুজোর খরচ সামলাতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে।” ইতালির মিলানের একটি গির্জার অনুকরণে তৈরি হচ্ছে ইউনাইটেড ক্লাবের পূজো মণ্ডপ। ৭২ ফুট উঁচু ও ৬৯ ফুট চওড়া ওই মণ্ডপ তৈরি করতে ব্যবহার করা হচ্ছে কাপড়, প্লাইউড ও ফাইবার। ভেতরে ফাইবারের বিভিন্ন মূর্তি, ঝাড়বাতি ও কৃষ্ণনগরের বোলানের সাজের প্রতিমা। এবারেও আলোকসজ্জায় সকলকে টেক্কা দিতে চায় গাংনী উদয়ন সঙ্ঘ। মালোয়েশিয়ার একটি টাওয়ারের অনুকরণে চন্দননগরের আলোকশিল্পীদের হাতে তৈরি হচ্ছে প্রবেশপথ। এ ছাড়াও ছোটদের মনোরঞ্জনের জন্য থাকছে টম অ্যান্ড জেরি, ছোটা ভীম। দক্ষিণ ভারতের একটি মন্দিরের অনুকরণে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ।

Advertisement

দক্ষিণ ভারতেরই একটি মন্দিরের অনুকরণে তৈরি হচ্ছে ন্যাশনাল বয়েজ ক্লাবের মণ্ডপ। ধবলগিরির মন্দিরের অনুকরণে আলো দিয়ে তৈরি হচ্ছে নজরকাড়া গেট। কর্নাটকের রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের অনুকরণে তৈরি হচ্ছে ফ্রেন্ডস ক্লাবের মণ্ডপ। এখানকার সবচেয়ে পুরানো পূজো ১১৮ বছরের পূর্ব বাদকুল্লা বারোয়ারি বা বুড়িমার পুজো। পুরানো ঐতিহ্য মেনে এখানে পুজো হয়। মহাঅষ্টমীর দিন প্রসাদ বিতরণ করা হয়। এক সময় কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ির সন্ধি পুজোর কামানের শব্দ শুনে এখানেও পূজো শুরু হত। সম্পাদক দেবাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “এখানকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ ঘাড়ে করে প্রতিমা অঞ্জনা নদীতে বিসর্জন দেন।”

পাড়ার মাঠে বিশ্বকাপ উপহার দিতে চলেছে পল্লিশ্রী। মাঠের মধ্যে থাকবে একটা বড় বল। খেলোয়াড়দের দেখা যাবে ওই বলের চারপাশে। কৃষ্ণনগরের শিল্পীর হাতে তৈরি ডাকের সাজের প্রতিমা নজর কাড়বে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের।

কাপড়, প্লাইউড দিয়ে তৈরি হচ্ছে মিলন সঙ্ঘের এ বছরের পুজো মণ্ডপ। প্যারিসের একটি গির্জার অনুকরণে তৈরি এই মন্দিরের ভিতরে থাকবে ঝাড়বাতি। চন্দননগরের আকর্ষণীয় আলোকসজ্জা শোভাবর্ধন করবে গোটা এলাকার। কর্নাটকের এক মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে সর্বশ্রী সঙ্ঘের মণ্ডপ। থাকছে ডাকের সাজের প্রতিমা।

এছাড়াও বাদকুল্লার অজয় সঙ্ঘ, যুবক সঙ্ঘ, ভ্রাতৃশ্রী সঙ্ঘ, নবীন সঙ্ঘ, ইয়ং স্টার, যুব পরিষদ, শ্যামা সঙ্ঘ-সহ আরও বেশ কয়েকটি ক্লাবের পুজো প্রতি বছরই নজর কাড়ে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement