সভার কাজ চলছে বৃহস্পতিবার রাতেও। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন তৃণমূলনেত্রী। আজ কৃষ্ণনগরের ভাতজাংলার মিলন মন্দির ক্লাবে তৃণমূলের কর্মিসভায় ভাষণ দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুর্শিদাবাদের লালবাগে দলীয় কর্মিসভার পরে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ তিনি কৃষ্ণনগরে এসে পৌঁছন। রাতে থাকবেন পালপাড়ার কাছে একটি হোটেলে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী ঢোকার আগে থেকেই হোটেলের সামনে হাজির ছিলেন দলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত ও কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কী কথা হল? প্রশ্নের উত্তরে উজ্জ্বলবাবু বলেন, “নেত্রী শহরে এসেছেন। তাই দেখা করতে এসেছিলাম। শুক্রবার তিনি কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে যা রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার দেবেন।”
ভোটের মুখে কৃষ্ণনগর শহরে ঘাঁটি গেড়েছেন তৃণমূল প্রার্থী তাপস পাল। তাঁকে অবশ্য হোটেলে দেখা যায়নি। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী সারা দিনের ধকলে ক্লান্ত। তাই আমি তাঁকে বিরক্ত করতে যাইনি। তবে উনি ডাকলেই আমি অনুগত সেনার মত ছুটব।”
জেলার রাজনীতি মহলের ধারণা, আগের তিনটি কর্মিসভার মতোই শুক্রবার কৃষ্ণনগরেও বিজেপিকে বার্তা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনিতেই কৃষ্ণনগর লোকসভায় বিজেপি’র ভাল ভিত রয়েছে। ২০০৪ সালে তৃণমূলের সমর্থনে বিজেপি প্রার্থী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় (জলুবাবু) জয়ী হন এই কেন্দ্র থেকে। পরে তিনি মন্ত্রীও হন। ২০০৯ সালে জলুবাবু ভোটে দাঁড়িয়ে পরাজিত হলেও প্রায় ১৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। এমনিতেই নির্বাচনের প্রাক্কালে বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা গেরুয়া-ঝড়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। মোদী ঝড়ের পাশাপাশি এলাকায় সত্যব্রতবাবু নিজস্ব ক্যারিশমাও রয়েছে। সব মিলিয়ে কৃষ্ণনগর লোকসভায় বিজেপি বাড়া ভাতে ছাই দিতে পারে বলে শাসকদল আশঙ্কা করছে। দিন কয়েক আগে তৃণমূল প্রার্থী তাপস পালের প্রথম প্রচারেও তাই বার বার বিজেপি’র সমালোচনা শোনা গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘নদিয়া জেলায় বিজেপি’র কোনও ভিত্তি নেই। অশীতিপর জলুবাবু এ বারের ভোটে কোনও ফ্যাক্টর নয়। তিনি আমাদের দলীয় প্রার্থীর জয়ের পথে কোনও বাধা তৈরি করতে পারবেন না।”
নদিয়া জেলায় প্রায় সাড়ে চার হাজার বুথ রয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রতিটি বুথ থেকে পাঁচ জন করে এ দিনের কর্মী সভায় হাজির থাকবেন। এ ছাড়াও বুথপিছু তৃণমূলের শাখা সংগঠনের এক জন করে সদস্য সভায় হাজির থাকবেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। সভাকক্ষে সকলে ঢুকতে পারবেন না। তাই সভাস্থলের বাইরে একাধিক এলসিডি পর্দা লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের জেলা নেতারা। জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘কর্মীদের যদি সকলের সভাস্থলের ভিতরে জায়গা না হয় তার জন্য আমরা বাইরে একাধিক এলসিডি পর্দা লাগানোর ব্যবস্থা করছি। এভাবেই নেত্রীর নির্দেশ সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।’’