স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা কে হবেন তাই নিয়ে পরিচালন সমিতি ও শিক্ষিকাদের মধ্যে বিরোধের জেরে দেড় মাস থেকে তালা বন্ধ সামশেরগঞ্জ ব্লকের দোগাছির ডিবিএস জুনিয়র মাদ্রাসা বালিকা বিদ্যালয়। সমস্যা মেটাতে দফায় দফায় পরিচালন সমিতি ও শিক্ষিকাদের সঙ্গে জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তাদের বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। ইতিমধ্যেই বিরোধের জেরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুলের সমস্ত শিক্ষিকা ও কর্মীদের মাসিক বেতনও। শো কজ করা হয়েছে স্কুলের সমস্ত শিক্ষিকাকেই। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। স্কুলটিতে প্রায় আটশো ছাত্রী পড়াশোনা করে। স্কুল তালা বন্ধ থাকায় তাদের পঠনপাঠন বন্ধ। ইউনিট টেস্ট ও হাফ ইয়ার্লি পরীক্ষাও নেওয়া যায়নি কারও। স্বাভাবিক ভাবেই বন্ধ মিড ডে মিল। ছাত্রীদের পোশাক, কন্যাশ্রী প্রকল্প বাবদ কয়েক লক্ষ টাকা এসে দীর্ঘ দিন পড়ে রয়েছে স্কুলের ফান্ডে।
২০০৯ সাল থেকে দোগাছি-বাউরিপুনি-সীতারামপুর হাই মাদ্রাসাকে ভেঙে ওই মাদ্রাসা ভবনেই বালিকাদের জন্য প্রাতঃকালীন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পৃথক জুনিয়ার মাদ্রাসা চালু করা হয়। স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে ৫ জন শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয় সেখানে। কিন্তু নিয়োগ হয়নি কোনও প্রধানশিক্ষিকা। প্রথম দিকে পালা করে সহকারি শিক্ষিকারাই তিন মাস করে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা হিসেবে স্কুলের কাজ চালাতেন। কিন্তু এ বছর জানুয়ারি মাস থেকে সমস্ত শিক্ষিকাই স্কুলের দায়িত্ব নিতে বেঁকে বসেন। তাঁদের দাবি, হয় প্রধান শিক্ষিকা নিয়োগ করতে হবে নাহলে বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করে স্কুলের মিড ডে মিল-সহ যাবতীয় দায়িত্ব সামলাতে হবে পরিচালন সমিতি ও শিক্ষা দফতরকে। এই নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয় জেলার শিক্ষা দফতরের কর্তাদের সঙ্গে পরিচালন সমিতি ও শিক্ষিকাদের। রাজ্য মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সচিব নুরে সালাম বলেন, “ওই স্কুলটি চালাতে কোনও একজন শিক্ষিকাকে তো ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে। স্কুলের প্রশাসনিক বহু কাজ রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকার সই ছাড়া কারও বেতনও হবে না। শিক্ষিকাদের সঙ্গে বেশ কয়েক বার বৈঠক করে তাঁদের পরিস্থিতি বুঝিয়ে অনুরোধও করা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা কেউই রাজি হননি ওই দায়িত্ব নিতে। ফলে গত এপ্রিল মাস থেকে বাধ্য হয়ে ওই স্কুলের সকলেরই বেতন বন্ধ করে দিতে হয়েছে। তারপরে কিছুদিন স্কুলটি চালানো হলেও ২৬ জুন থেকে তা পুরোপুরি তালা বন্ধ। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে পরিচালন সমিতিকে।”
পরিচালন সমিতির সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, “কোনও শিক্ষিকাই স্কুলে আসছেন না। স্কুলটি গ্রীষ্মাবকাশের পর ২৬ জুন খোলার কথা ছিল। কিন্তু কোনও শিক্ষিকা আর স্কুলে না আসায় স্কুলটি তালা বন্ধ হয়ে রয়েছে। ছাত্রীরা দু’- চার দিন স্কুলে এসে ঘুরে যাওয়ায় তারাও আর স্কুলে আসছে না। শিক্ষিকাদের শো কজ করা হয় গত ১৫ জুলাই। সময় পেরিয়ে গেলেও কোনও শিক্ষিকাই তার জবাব দেননি। তাই তাঁদের সাসপেন্ড করার পথে এগোচ্ছে পরিচালন সমিতি।” স্কুল পরিচালন সমিতির এক সদস্য জার্জিস হোসেন বলেন, “পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই এলাকায় বহু আশা নিয়ে বালিকা বিদ্যালয়টি খোলা হয়েছিল। শিক্ষিকারা সকলেই বহিরাগত বলে তাঁরা স্কুলেও ঠিকমতো আসতেন না।”
শিক্ষিকা জয়া চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি তাঁরই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হওয়া উচিত। কিন্তু সেই নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে না। ৮০০ ছাত্রীর প্রতিদিনের মিড ডে মিল চালানোর অনেক ঝামেলা। পান থেকে চুন খসলেই অশান্তি। এপ্রিল মাস থেকে শিক্ষিকাদের বেতন বন্ধ।” আর একজন শিক্ষিকা মিঠুয়া সরকার বলেন, “ওই স্কুলে কিছু সমস্যার কারণে স্কুলটি বন্ধ হয়ে রয়েছে। আমরা জানি এতে ছাত্রীদের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষিকাদের বেতন বন্ধ করে শো কজ করে তার সমাধান হবে না। স্কুলের অচলাবস্থা কাটাতে বাস্তব পরিস্থিতি বুঝেই পদক্ষেপ নিতে হবে সকলকে।”
বিয়ে বন্ধ। বেলডাঙার বেগুনবাড়ি বাথানপাড়ায় এক নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসনের কর্তারা। বুধবার বিয়ের সব প্রস্তুতি শেষও হয়ে গিয়েছিল। পরে প্রশাসনের লোকজন খবর পেয়ে ওই নাবালিকার বাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেন। বিয়ের সময় প্রশাসনের উপস্থিতিতে মেয়ের মা লিখিত ভাবে জানান ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেওয়া হবে না।