ভুরিভোজেও বহাল কোন্দল

খাওয়াদাওয়া নিয়ে গণ্ডগোল। ফের তৃণমূল কর্মীরা জড়িয়ে পড়লেন অশান্তিতে। রবিবার কল্যাণী শিক্ষায়তনের মাঠে বিরাট আয়োজন করা হয়েছিল খাওয়া দাওয়ার। প্রায় আট হাজার কর্মীর খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। সেই মতো তাঁদের জন্য কুপনের ব্যবস্থা করেছিল দল। যথাসময়ে তা বিলিও হয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ০০:৫৩
Share:

চলছে খাওয়া দাওয়া।—নিজস্ব চিত্র।

খাওয়াদাওয়া নিয়ে গণ্ডগোল। ফের তৃণমূল কর্মীরা জড়িয়ে পড়লেন অশান্তিতে। রবিবার কল্যাণী শিক্ষায়তনের মাঠে বিরাট আয়োজন করা হয়েছিল খাওয়া দাওয়ার। প্রায় আট হাজার কর্মীর খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। সেই মতো তাঁদের জন্য কুপনের ব্যবস্থা করেছিল দল। যথাসময়ে তা বিলিও হয়ে যায়।

Advertisement

কিন্তু দুপুর ১২ টা নাগাদ কল্যাণী মোড়ে কুপন কম পড়ায় শুরু হয় বিতণ্ডা। হরিণঘাটার বিভিন্ন এলাকা থেকে বাইক মিছিল করে আসা কর্মীরা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। একদল কর্মীর কটাক্ষ কুপন নিয়েও দুর্নীতি চলছে নাকি! সেখান থেকেই বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ও সদ্য নির্বাচিত হরিণঘাটা ব্লক সভাপতি চঞ্চল দেবনাথ। তবে গণ্ডগোলের কথা তিনি স্বীকার করেননি। বরং বলেছেন, “কুপন কম পড়ায়, সামান্য সমস্যা দেখা দিয়েছিল। পরে কুপন দিয়ে সেই সমস্যা মেটানো গিয়েছে। এর আগেও চাপড়া পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পত্র পেশ করার দিন খাওয়া নিয়ে গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল কর্মীরা। যে হোটেলে সে দিন খাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল, সেখানে চেয়ার টেবিল উল্টে লণ্ডভণ্ড করে দেন কর্মীরা।

Advertisement

এ দিন প্রায় ৮ হাজার কর্মীর খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিটি বুথ থেকে কমপক্ষে ১০ জন করে আসার কথা ছিল। তাঁদের কুপন দেওয়া হয়েছিল সভা শুরুর আগেই। স্কুলের মাঠে বিশাল মণ্ডপ। তার নীচে ভোজের ঢালাও আয়োজন। শুধু বসে নয়, ব্যবস্থা ছিল বুফেরও। অপেক্ষার কোনও বালাই নেই। খেতে ইচ্ছে হলে থার্মোকলের থালা নিয়ে সাজিয়ে রাখা নানা পদের দিকে এগিয়ে গেলেই হল। ভাত, ডাল, সব্জি, ডিমের তরকারি থেকে শেষ পাতে মিষ্টিমুখেরও আয়োজন। মিষ্টিতেও বৈচিত্র্য, রসগোল্লা থেকে পানতুয়া সবই রয়েছে। যার যেটা পছন্দ। কর্মীরা করলেনও তাই। দুপুর ২টো নাগাদ সবায় এসে পৌঁছলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তার অনেক আগেই খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়েছেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কর্মীরা। অনেককেই দেখা গেল জলের বোতল হাতে নিয়ে রওনা দিয়েছেন স্টেশনের দিকে। বলেও ফেললেন দু’একজন, আজ তো শুধু খাওয়াদাওয়ারই আয়োজন ছিল।

সে কথা সত্যি। শুধু কল্যাণী নয়। এমন আয়োজন ছিল বনগাঁতেও। সেখানেও সাক্ষী ছিলেন হাজার দশেক তৃণমূল নেতা কর্মী। এমন আয়োজন নতুন না হলেও এদিনের ভোজসভার অভিজ্ঞতাটা অবশ্য কর্মীদের কাছে ছিল একেবারেই অন্যরকম। কারণ প্রেক্ষিতটাও যে একেবারেই ভিন্ন। এ দিনের আমন্ত্রণ এসেছিল যে একেবারে ‘দিদি’র কাছ থেকে। আয়োজনও ‘দিদি’র নিজের টাকায়। শেষ পাতে রসগোল্লা মুখে তুলতে তুলতে এক কর্মী বললেন, “ভাবতেই পারছি না দিদির টাকায় খাচ্ছি। দিনটার কথা জীবনেও ভুলতে পারব না।’’ ‘দিদি’ মানে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বনগাঁ লোকসভার উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মমতা ঠাকুরের বিপুল জয়ে বেজায় খুশি হয়ে বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের নেতা কর্মীদের জন্য এদিন মুখ্যমন্ত্রী ব্যক্তিগত খরচে ভুরিভোজের আয়োজন করেছিলেন।

কল্যাণীতে সভা শেষ করে বেলা ৩টে নাগাদ খেতে বসলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে বসলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত, কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, শান্তিপুরের বিধায়ক অজয় দে, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বানী কুমার রায়রা। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী বলেন, “সকলে আজ একত্রিত হয়েছেন। গেট টুগেদার করছেন। আমি রাজ্য দলের পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে আপনাদের ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা দিতে এসেছি।” বনগাঁ, কল্যাণী দু’জায়গাতেই প্রায় একই কথা শোনান তিন। তবে কোনওখানেই ভোজে অংশ নেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement