বাজেট সভাকে ঘিরে জঙ্গিপুরে কংগ্রেস-সিপিএম সংঘর্ষ

বাজেট পাশের সভাকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়ে উঠল জঙ্গিপুর। সিপিএম ও কংগ্রেস সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে চলল পুলিশের লাঠি। বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনায় মোট পাঁচ জন জখম হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১২
Share:

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের মার। —নিজস্ব চিত্র

বাজেট পাশের সভাকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়ে উঠল জঙ্গিপুর। সিপিএম ও কংগ্রেস সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে চলল পুলিশের লাঠি। বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনায় মোট পাঁচ জন জখম হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সিপিএম নিয়ন্ত্রিত রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লক অফিসে পঞ্চায়েত সমিতির চূড়ান্ত বার্ষিক বাজেট পাশের জন্য সাধারণ সভা ডাকা হয়। পঞ্চায়েত সমিতির ৪৪ জন সদস্যের মধ্যে এ দিন হাজির ছিলেন দুই দলের ৪০ জন সদস্য। কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা আবুল কাশেমের অভিযোগ, “বেলা দেড়টায় সভা শুরুর কথা ছিল। বেলা আড়াইটে পর্যন্ত অপেক্ষার পর সভায় খাতায় স্বাক্ষর করেন ২০ জন বাম সমর্থক। আমরা কোরাম না হওয়ায় সভা ছেড়ে বেরিয়ে আসার পথে একমাত্র তৃণমূল সদস্যকে সভায় হাজির করিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। কংগ্রেসের এক মহিলা সদস্যকেও সই করানো হয় জোর করে। এই ঘটনাকে মদত দেন পঞ্চায়েত সমিতির সচিব। এই সভা তাই অবৈধ।”

অভিযোগ ওই ঘটনার প্রতিবাদে, সদস্যদের সই করা রেজোলিউশন খাতা ছিনিয়ে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেন কংগ্রেস সদস্যরা। এরপরেই সভা ভেস্তে যায়। সচিবকে অফিসেই ঘিরে রেখে রাখেন কংগ্রেস সদস্যরা। অফিসের কাজকর্ম পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। দুই দলের সমর্থকেরা ব্লক অফিসের সামনে ধর্নায় বসে পড়েন। খবর পেয়ে দু’দলের আরও সমর্থক বিডিও অফিসে জমায়েত হতে থাকেন। তাঁদের পুলিশ ঘিরে রাখে। সেই সময় কংগ্রেসের কিছু সমর্থক অফিসে ঢোকার চেষ্টা করলে শুরু হয়ে যায় সিপিএম ও কংগ্রেস সমর্থকদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চালালে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। পরে আরও পুলিশ এসে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। তবে লাঠি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ।

Advertisement

পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের মাফরুজা খাতুন বলেন, “নিয়ম মেনেই ২২ জন সদস্য সই করেছেন। ফলে সভায় কোরাম হয়েছে। তবে সভায় কোনও আলোচনা শুরুর আগেই সচিবের হাত থেকে রেজোলিউশন খাতা ছিনিয়ে নেয় কংগ্রেসের সদস্যরা। তারপরেই সব ভেস্তে যায়।” এ দিনের সভায় হাজির ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সচিব প্রশান্ত কুমার মণ্ডল। তিনি বলেন, “এ দিন নির্দিষ্ট সময়ের পরে দুপুর ২ টো ৪০ মিনিট নাগাদ সভায় এসে সই করেন এক সদস্যা। তা নিয়েই উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং আমার হাত থেকে খাতা কেড়ে নেওয়া হয়। সভায় কোনও আলোচনাই করা যায়নি।” প্রায় ৩ ঘণ্টা পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ছিনতাই হওয়া খাতা হাতে ফেরত পান পঞ্চায়েত সভাপতি। এরপর দুই দলের সমর্থকরাই সন্ধ্যে সাড়ে ৫টা নাগাদ বিক্ষোভ তুলে নেয়। জঙ্গিপুরের যুগ্ম বিডিও দেবেনচন্দ্র দাস বলেন, “এ দিন ৪০ কোটি ২৯ লক্ষ ২৯ হাজার টাকার বাজেট পাশের সভা ছিল। খসড়া বাজেট ২৪ ডিসেম্বর পাশ হয়েছে। বৃহস্পতিবার ছিল চূড়ান্ত বাজেট পাশের সভা। গোলমালের কারণে সেই সভা এ দিন হয়নি। সচিবের কাছ থেকে রিপোর্ট পেলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ওই সভা বৈধ না অবৈধ।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement