ছেলের খুনের ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করছে সিপিএম এমনই অভিযোগ নিয়ে নদিয়ার জেলাশাসকের দ্বারস্থ হলেন ফুলিয়ায় স্কুলে নিহত ছাত্রের পরিবার। সোমবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের সঙ্গে গিয়ে নিহত ছাত্রের বাবা-মা এই অভিযোগ করেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক উৎপল ভদ্রের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতের লিখিত অভিযোগ করেন তাঁরা।
ইভটিজিং-এর প্রতিবাদ করায় গত ২৬ মার্চ স্কুলের ভিতরেই খুন হয়েছিল ফুলিয়া ব্যঙগর্ত কলোনির বাসিন্দা, ফুলিয়া বিদ্যামন্দিরের একাদশ শ্রেণির ছাত্র অজয় ঘোষ (১৭)। এই ঘটনায় পুলিশ একাদশ শ্রেণির দুই ছাত্র-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে। ধৃত ছাত্রদের মধ্যে এক জন তৃণমূলের শান্তিপুর ব্লক সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তপন সরকারের আত্মীয়। ধৃত বাকি দুই দুষ্কৃতী এলাকায় তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনার পর সিপিএম ময়দানে নেমে পড়ে। নিহত ছাত্রের ছবি দিয়ে ফ্লেক্স বানিয়েছে তারা। নিহত ছাত্রের মা রমা ঘোষের অভিযোগ, ‘‘আমার ছেলের খুনের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। তবুও সিপিএম সেটাকে নিয়ে রাজনীতি করছে। আমার ছেলের ছবি-সহ নানা রকম কুরুচিকর মন্তব্য সহকারে ফুলিয়া ও শান্তিপুরের বিভিন্ন এলাকায় ফ্লেক্স-ব্যানার লাগিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে ওরা। এই ঘটনায় আমরা তীব্র মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করছি। আমরা চাই প্রশাসন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। কিন্তু প্রশাসন তা করছে না।’’ গৌরীবাবুর বক্তব্য, ‘‘অতিরিক্ত জেলাশাসক আমাদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ পেলে যে ভাবে সক্রিয় হন, সিপিএম-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ততটা সক্রিয় হন না। ফুলিয়াতে সিপিএম ছাত্র খুনের ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করছে। এই নিয়ে অভিযোগ জানানো হলেও তিনি আশ্চর্যজনক ভাবে নীরব।’’
সিপিএম-এর শান্তিপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক শান্তনু চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘ছাত্র খুনের বিষয়টি কারও পরিবারের বিষয় না। গোটা সমাজ এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল। এই খুনের ঘটনার পরে তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি সরে যাওয়ায় ওরা একেবারে মরীয়া হয়ে গিয়েছে। নিহত ছাত্রের পরিবার ভয়ঙ্কর চাপে আছে।’’ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে উৎপলবাবু মন্তব্য করতে না চাইলেও জেলাশাসক পি বি সালিম বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। দু’টি অভিযোগই খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’