নাটকীয় ভাবে স্থগিত রাখা হল নদিয়ার গাংনাপুর আঁইশমালি গ্রাম পঞ্চায়েতের আস্থাভোট। প্রশাসনের তরফেই মঙ্গলবার ওই ভোট গ্রহণের দিন স্থির হয়েছিল। সেইমতো পুলিশি ব্যবস্থা করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সোমবার রাত ১০ টা নাগাদ পঞ্চায়েত সদস্যদের কাছে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে ভোট স্থগিতের কথা।
ঘটনায় ক্ষুব্ধ সিপিএম সদস্যরা। আঁইশমালি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের গৌতম প্রসাদ মিত্র জানান, নভেম্বরের শুরুতে সিপিএমের নয় জন এবং তৃণমূলের চার জন সদস্য তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের প্রধান পুতুল গোলদারের বিরুদ্ধে অনাস্থা চেয়ে রানাঘাট ২ বিডিও শিল্পী সিংহের কাছে চিঠি দেন। গৌতমবাবু বলেন, “নিরাপত্তা চেয়ে আমরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আদালত প্রশাসনকে নির্দেশ দেয় আস্থাভোটে আমাদের যথাযথ নিরাপত্তা দিতে। সেই অনুযায়ী পুলিশ সোমবার রাতে সব সদস্যদের একসঙ্গে থাকার কথা জানায়।”
ওই সদস্যরা সোমবার রাতে আঁইশমালি পুলিস ফাঁড়ির সামনে একটি বাড়িতে ছিলেন। দুপুর থেকেই দু’জন অফিসার-সহ ১০ জন পুলিশ ছিলেন পাহারায়। রাত ১০ টা নাগাদ প্রশাসনের তরফে চিঠি দিয়ে জানানো হয় অনির্দিষ্ট কালের জন্য আস্থাভোট স্থগিত রাখা হল। পরে পুলিশে প্রহরায় যে যাঁর বাড়ি ফিরে যান পঞ্চায়েত সদস্যরা। গৌতমবাবুর দাবি, “পরাজয় অনিবার্য বুঝে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে আস্থাভোট স্তগিত করে দিল তৃণমূল।”
বিডিও শিল্পী সিংহ বলেন, “এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল না। পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা না-করতে পারায় ভোট স্থগিত রাখা হয়েছে। প্রধান পুতুল গোলদার বলেন, “ভোটের ফলাফল কী হত তা তো জানি না। তবে শুনেছি প্রশাসন পুলিশ দিতে পারবে না বলে ভোট স্থগিত করে দিয়েছে।” জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশংকর দত্ত অবশ্য বলেন, “আস্থাভোট হলেও প্রধানের অপসারিত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা ছিল না। তাছাড়া আমরা সিপিএমের মতো প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে ভোটে জিতি না।”
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২০ সদস্যের গ্রাম পঞ্চায়েতটিতে দশটি আসন তৃণমূল, নয়টি সিপিএম এবং একটি আসন নির্দল দখল করে। নির্দল সদস্য দীপক সিকদার তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল। বোর্ড গঠন হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। চার সদস্য অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করায় সেই কোন্দলের প্রকাশ্যে চলে আসে।