কৃষ্ণনগর উত্তরের রং যদি গোলাপী হয় তাহলে কল্যাণী মেরুন। আবার নবদ্বীপ যদি কমলা হয় তাহলে তেহট্টের রং হালকা সবুজ। চাপড়া অফ হোয়াইট, রানাঘাট নীল। নদিয়া জেলা জুড়ে যেন রং মিলান্তি খেলা। ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় সঠিক রং মিলিয়ে নিতে পারলেই ভোট কর্মীদের আর কোনও চিন্তা নেই। ভোটের জন্য সরঞ্জাম নেওয়ার কাউন্টার, ব্যাগ, স্টিকার সবই হবে সেই নির্দিষ্ট রং মিলিয়ে। জেলা প্রশাসনের দাবি, রং এর পাশাপাশি ভোটকর্মীদের জন্য এমন বেশ কিছু ব্যবস্থা করা হচ্ছে যাতে জেলার প্রায় সাড়ে একুশ হাজার ভোটকর্মী নিশ্চিন্তে কাজ করে বাড়ি ফিরতে পারবেন।
এবারের লোকসভা ভোটে নির্বাচন কমিশন ভোটকর্মীদের জন্য ‘পোলিং পার্সনেল ওয়েলফেয়ার ম্যানেজমেন্টের’ উপরে বিশেষ জোর দিয়েছে। কমিশনের সেই সুপারিশ মাথায় রেখে নদিয়া জেলা প্রশাসন ভোটকর্মীদের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। নদিয়ার জেলাশাসক পি বি সালিম বলেন, “মোট ২১৫৯২ জন ভোটকর্মী ৪৫২৭টি বুথে ভোট গ্রহণ করবেন। তার মধ্যে ৫০টি বুথ সম্পূর্ণ ভাবে মহিলা পরিচালিত। ভোটকর্মীদের কষ্ট লাঘব করতে আমরা ওঁদের জন্য ভোট কেন্দ্রে যাওয়া থেকে বাড়ি ফেরা, খাওয়াদাওয়া, পানীয়জল, ওআরএস, ওষুধ সব কিছুরই ব্যবস্থা করছি। হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে বাংলায় লেখা একটি নির্দেশিকার পাশাপাশি সুগন্ধী ধূপও দেওয়া হবে।” জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নায্য মূল্যে যাতে ভোটকর্মীরা খাবার পান সেজন্য বিতরণ কেন্দ্রে (ডিসিআরসি) তৈরি করা হচ্ছে ফুড প্লাজা। আর ভোট কেন্দ্রে কর্মীদের খাবার দেবেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। বুথ ফেরত ভোট কর্মীদের জন্য অপেক্ষা করবে ‘ওয়েলকাম লাউঞ্জ’। ক্লান্ত কর্মীদের সরঞ্জাম ফেরত দেওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হবে না। লাউঞ্জে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে দেওয়া হবে একটি করে টোকেন। ওই টোকেন হাতে নিয়ে ভোটকর্মীরা লাউঞ্জের সোফায় বিশ্রাম নেবেন। থাকবে চা-কফি-ঠান্ডা পানীয়ের ব্যবস্থা। বাজবে গজল কিংবা রবীন্দ্রসঙ্গীত। লাউঞ্জে রাখা একাধিক এলসিডি মনিটর জানিয়ে দেবে ভোটকর্মীর হাতের টোকেনটি কখন কোন কাউন্টারে জমা করতে হবে। রাতে বাড়ি ফেরাও চিন্তা নেই। প্রতিটি রুটের জন্য গাড়ির ব্যবস্থাও করছে জেলা প্রশাসন। ফেরার আগে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক ভোটকর্মীকে দেওয়া হবে শুভেচ্ছাপত্র ও স্মারক উপহার।