জল এল প্লাটফর্মের কলে

কোনওটায় খুব সরু হয়ে জল পড়ত। কোনওটায় এক ফোঁটাও পড়ত না। আবার কয়েকটি কল ভাঙাও ছিল। এমনই অবস্থা ছিল ঝা-চকচকে কল্যাণী শিল্পাঞ্চল স্টেশনের পানীয় জলের কলগুলির। দীর্ঘদিন ধরেই এগুলি অকেজো হয়ে পড়ে ছিল, এমনটাই অভিযোগ উঠেছিল নিত্যযাত্রীদের এবং হকারদের পক্ষ থেকে।

Advertisement

মৌ ঘোষ

কল্যাণী শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৪ ০১:০১
Share:

কোনওটায় খুব সরু হয়ে জল পড়ত। কোনওটায় এক ফোঁটাও পড়ত না। আবার কয়েকটি কল ভাঙাও ছিল। এমনই অবস্থা ছিল ঝা-চকচকে কল্যাণী শিল্পাঞ্চল স্টেশনের পানীয় জলের কলগুলির। দীর্ঘদিন ধরেই এগুলি অকেজো হয়ে পড়ে ছিল, এমনটাই অভিযোগ উঠেছিল নিত্যযাত্রীদের এবং হকারদের পক্ষ থেকে।

Advertisement

স্টেশনটির একটি প্ল্যাটফর্ম। সকাল-সন্ধ্যা সব্জির বাজারও বসে যায়। প্ল্যাটফর্ম জুড়ে হরেক রকমের পসরা সাজিয়ে বসেন স্থানীয় দোকানদারেরা। অনেক সময় অফিস ফেরত লোকজন ট্রেন থেকে নেমে প্ল্যাটফর্মেই বাজার সেরে বাড়ি ফেরেন। প্ল্যাটফর্মের দোকানদারেরা প্রত্যেকেই পানীয় জল বাইরে থেকে এনে ব্যবহার করতেন। এ দিকে অফিস টাইমে যাত্রীরা দৌড়তে দৌড়তে স্টেশনে পৌঁছে খাওয়ার জলটুকু পর্যন্ত পেত না। এই প্রচণ্ড গরমেও কলে জল না থাকায় একসময় বার বার সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। শুধু জলের কলগুলির দিকে তাকিয়েই তৃষ্ণা মেটাতে হয়েছে। কিন্তু এ বার যাত্রীদের প্রতীক্ষা শেষ। রেলের তরফে কলগুলি সারানো হয়েছে। দীর্ঘদিন পর কল্যাণী শিল্পাঞ্চল স্টেশনের কলগুলিতে জল আসায় খুশি যাত্রীরা।

কল্যাণীর এক বাসিন্দা সুস্মিতা রায় কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। প্রত্যেক দিন কল্যাণী শিল্পাঞ্চল স্টেশন থেকেই ৯.১৬-র কল্যাণী লোকাল ধরে বিধাননগরে যান। তাঁর কথায়, “সকালবেলায় স্টেশনে এসেই একটু জলের খোঁজে কলগুলির দিকে যেতাম। কিন্তু জল না পেয়ে মুখ শুকনো করেই ফিরে আসতে হত। কিন্তু এখন জল আসাতে সমস্যার সুরহা হল।” সুস্মিতাদেবীর মতো বহু মানুষই এমন সমস্যার মুখেমুখি হয়েছেন প্রায়শই। নিখিল দে নামে আর এক জন যাত্রী বলেন, “শুধু সকালে কেন, যখন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ অফিস থেকে ফিরি তখনও এখানে জল পাওয়া যেত না। যদিওবা দু’-একটি কলে জল পড়ত, তা তেষ্টা মেটার মতো নয়। সরু সুতোর মতো জল বেরোত কলগুলি থেকে। ফলে বাধ্য হয়ে জল কিনে খেতে হত। এখন স্টেশনে জল আসাতে আর জল কিনে খেতে হচ্ছে না।” এই স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম একটি। তাতে পানীয় জলের কল রয়েছে মোট ৯টি। ওই স্টেশনে গিয়ে দেখেছিলাম, একটি কল দিয়ে সরু সুতোর মতো জল পড়ছে। তারই সামনে বেশ কয়েক জনের লাইন। অন্যগুলিতে অবশ্য ছিটেফোঁটাও জল পড়ছে না। স্টেশনের এক কচুরি বিক্রেতা বলেন, “বাইরে থেকে জল এনে রান্না করতে হত। সন্ধে বেলা যাত্রীদের ভিড় বাড়ে। তখন অসুবিধা হত। এখন আমাদের সুবিধা হল।” তা ছাড়া, স্টেশনের পাশেই কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। আশপাশে বেশ কয়েকটি কারখানাও রয়েছে। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এই স্টেশন ব্যবহার করেন। নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, বহু গরিব মানুষ এই স্টেশনে যাতায়াত করেন। তাঁদের অনেকেরই জল কিনে খাওয়ার ক্ষমতা থাকে না। ফলে গুরুত্বপূর্ণ ওই স্টেশনে জল পেয়ে খুশি যাত্রীরা।

Advertisement

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “জলের লাইনের সংযোগ খারাপ হয়ে গিয়ে এই সমস্যা হয়েছিল। তা ছাড়া স্টেশনের যে এই অবস্থা তা আমার জানা ছিল না। আপনাদের থেকে জানতে পেরে ব্যবস্থা নিয়েছি। ভবিষ্যতে এ দিকে নজর রাখা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement