দিন কুড়ি আগে জেলা প্রশাসনের তরফে সমস্ত ব্লকে একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা প্রদানের ব্যাপারে চিঠি গেলেও নদিয়ার কোনও গ্রাম পঞ্চায়েত এখনও পর্যন্ত কোনও টাকা পায়নি। প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলার ১৫৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ২১ কোটি ১৬ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫৯৫ টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু চিঠি দেওয়ার পর প্রায় কুড়ি দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত সে টাকা না পাওয়ায় একশো দিনের কাজ করানোর ব্যাপারে সমস্যায় পড়েছে জেলার পঞ্চায়েতগুলি।
নিয়ম অনুযায়ী, বকেয়া টাকার বরাদ্দ সংক্রান্ত চিঠির সঙ্গে ব্লকে ব্যাঙ্কের একটি নথিও পাঠানো হয়। সেই নথিতে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির অ্যাকাউন্ট নম্বর উল্লেখ থাকে। এ ছাড়াও কোন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে পঞ্চায়েতগুলি অর্থ পাবে তাও ওই কাগজে নির্দিষ্ট ভাবে লেখা থাকে। কিন্তু চলতি মাসের ১ তারিখে পঞ্চায়েতগুলি তাদের বকেয়া টাকা পাবে এই মর্মে জেলা প্রশাসন চিঠি পাঠালেও ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত কোনও তথ্য জানানো হয়নি।
কালীগঞ্জ ব্লকে এই মুহূর্তে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ২ কোটি ২৩ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে। ওই ব্লকেরই জুরানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বকেয়া টাকার পরিমাণ ৩৯ লক্ষ ৪ হাজার। মাটিয়ারি পঞ্চায়েতে বকেয়া রয়েছে ২৫ লক্ষ ৫ হাজার টাকা। মাটিয়ারি পঞ্চায়েতের প্রাপ্র্য টাকার অঙ্ক ১২ লক্ষ ২৩ হাজার। মাটিয়ারি পঞ্চায়েতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত এক কর্মী বলছেন, ‘‘সাধারণত বকেয়া টাকা সংক্রান্ত চিঠি আসার দিন তিনেকের মধ্যেই আমরা অর্থ পেয়ে যাই। কিন্তু এ বার কুড়ি দিন পেরিয়ে গেলেও টাকা মিলল না। শ্রমিকরা মাঝেমধ্যেই পঞ্চায়েতে এসে ঝামেলা করছে।’’
জেলা প্রশাসন কেন এখনও পর্যন্ত ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত কোনও তথ্য ব্লকে পাঠাল না? কেনই বা এত দিন কেটে গেলেও পঞ্চায়েতগুলি একশো দিনের কাজের টাকা পেল না? জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে টাকার অভাব রয়েছে। এই খাতে অর্থ প্রায় নেই বললেই চলে। তাই বকেয়া অর্থ পঞ্চায়েতগুলিকে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা দেওয়া যাচ্ছে না। এদিকে মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্ম নিশ্চয়তা আইনের বলে গ্রামের লোকজন একশো দিনের কাজ পেয়ে থাকে। তাই শ্রমিকদের মজুরি না দিলে আইন ভঙ্গ করা হবে। সেক্ষেত্রে শ্রমিকরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করতে পারেন। এই অবস্থায় জেলা প্রশাসন বকেয়া টাকা দেওয়া হবে বলে ব্লকগুলিকে চিঠি পাঠালেও জেলা প্রশাসন অর্থের কোনও সংস্থান করতে পারেনি। জেলার এনআরইজিএ বিভাগ সূত্রের খবর, অন্য দফতরের বরাদ্দ থেকে ঋণ নিয়ে ওই টাকা দেওয়ার ব্যাপারে পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু ঋণ জোগাড় করতে দেরি হওয়ার জন্য পঞ্চায়েতগুলিকে এখনও টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। নদিয়ার জেলাশাসক পিবি সালিমের বক্তব্য, “অর্থের সংস্থান অনেকটা করা গিয়েছে। আশা করি পঞ্চায়েতগুলিকে দ্রুত তাদের বকেয়া টাকা দিয়ে দেওয়া হবে।