বাজারে চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। ছবি: বিশ্বজিৎ রাউত।
পুজোর উৎসবের আনন্দের রেশ মিলিয়ে যেতে না যেতেই রাত পোহালেই পরব দোরগোড়ায়! আজ, সোমবার ইদুজ্জোহার জন্য প্রস্তুত মুর্শিদাবাদ।
বেশ কয়েক বছর পরে ফের দুর্গাপুজোর প্রতিমা নিরঞ্জনের ঢাকের আওয়াজের সঙ্গে মিশে যাবে ইদুজ্জোহার আজানের সুর! যদিও পরব উপলক্ষে রবিবার সকাল থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত কোনও প্রতিমা নিরঞ্জন হবে না বলে পুলিশ প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবে কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সে দিকে সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। মুর্শিদাবাদ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ২৭টি থানার পুলিশকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বহরমপুরের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন বড় ঈদগাহ, যেখানে সবচেয়ে বেশি মানুষ নমাজ পাঠের জন্য জমায়েত হন, সেখানে পুলিশ পাহারা থাকবে। কোথাও কোথাও সাদা পোশাকের পুলিশও নজরদারি চালাবে।
মুর্শিদাবাদের ডোমকলে ঈদ উপলক্ষে সেজে উঠছে মসজিদ।
এদিকে ঈদুজ্জোহাকে সামনে রেখে এ দিন সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ঈদগাহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রঙিন কাগজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ঈদগাহ। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ কাজের সন্ধানে যারা বাইরে ছিলেন, তাঁদের বাড়ি ফিরে আসার কারণে গত কয়েক দিন ধরে বাসে-ট্রেনে তিল ধারণের জায়গা নেই। কেউ আত্মীয়-পরিজনদের জন্য নতুন পোশাক বাক্স-বন্দি করে এনেছেন, কেউ আবার মোহনা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস ধরার আগে বহরমপুর থেকে নতুন পোশাক কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। তাদের সকলের চোখে-মুখে আনন্দের রেশ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ঈদের নমাজ দেরি করে হলেও ঈদুজ্জোহার নামাজ সব সময়েই সকালের দিকে একটু তাড়াতাড়ি হয়ে থাকে। ফলে সকলেই তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে চাইছেন। যারা কর্মসূত্রে বা বিভিন্ন কারণে বহরমপুরে রয়েছেন, তাঁরাও এদিন সন্ধ্যায় বাড়ি পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন। কেউ কেউ ঈদুজ্জোহার দিন সকালে গিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে মিলিত হন। সব মিলিয়ে উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে মুর্শিদাবাদ।
তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে রবিবার সকাল থেকেই লালবাগের আয়েসবাগ বারোয়ারি দুর্গোৎসব কমিটির আকর্ষণীয় ও সুবিশাল মণ্ডপসজ্জা দেখতে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। পুজোর দিনগুলিতে ভিড়ের কারণে যাঁরা কাছে থেকে প্রতিমা বা মণ্ডপ দর্শন করতে পারেননি,এ দিন বহরমপুরের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সেই সমস্ত কয়েক হাজার দর্শনার্থী ভিড় করেন প্রতিমা ও মণ্ডপসজ্জার টানে। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশ মেনে এ দিন সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় পুজো কমিটি। ফলে দুপুরের পর থেকেই দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে ‘লাইনে না দাঁড়ানোর’ অনুরোধ জানিয়ে একটানা মাইকে প্রচার চালানো হয়। ওই পুজো কমিটির কর্তা দিলীপকুমার মজুমদার বলেন, “গত কয়েক দিনের মতো এ দিনও সকাল থেকেই প্রতিমা ও মণ্ডপ দর্শনের জন্য সাধারণ মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। ওই ভিড় সামাল দিয়ে সুষ্ঠু ভাবে প্রতিমা নিরঞ্জন হওয়া নিয়েই সংশয় ছিল। ফলে মাইকে একটানা প্রচার চালিয়ে দর্শনার্থীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। দর্শনার্থীদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ যে তাঁরা আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়েছেন।”