প্রতীকী ছবি।
স্কুলের নিভৃতাবাস থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে গেলেন দুই পরিযায়ী শ্রমিক। এতেই ক্ষান্ত হননি তাঁরা। গেলেন এলাকার এক বিয়েবাড়িতেও। পরে তাঁদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট এল পজ়িটিভ। তেহট্ট ১ ব্লকের ফতাইপুর গ্রামের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই শ্রমিকের একজন সম্পর্কে অপরজনের শ্যালক। তাঁরা নিভৃতাবাসের দায়িত্বে থাকা লোকজনদের গালিগালাজ করে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। তাঁদের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পর মুসলিম পাড়া এলাকা কনটেনমেন্ট জ়োন হিসাবে ঘোষণা করে প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত কিছুটা হলেও খুশির মেজাজে ছিল তেহট্ট ১ ব্লক। কারণ, কিছু দিন ধরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়েনি। কিন্তু মঙ্গলবার এই ব্লকে চারজনের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। যার মধ্যে বেতাই উত্তর ও দক্ষিণ জিতপুরের দুই বাসিন্দা রয়েছেন। বাকি দু’জন তেহট্টের ফতাইপুরের বাসিন্দা।
স্থানীয় ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ফতাইপুরের বাসিন্দা ২৯ বছর বয়সি এক যুবক এবং তাঁর জামাইবাবু গত ১ জুলাই বেঙ্গালুরু থেকে গ্রামে ফেরেন। দু’জনকে ফতাইপুর জুনিয়ার প্রাইমারি স্কুলের নিভৃতাবাসে রাখা হয়েছিল। স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ জানান, ১০ জুলাই তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সে তেহট্টের আইসোলেশন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় নমুনা পরীক্ষার জন্য। পরে আবার তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সে স্কুলে নামিয়ে দেওয়া হয়। বারবার বলা হয়, ওই স্কুলে থাকতে যত দিন না তাঁদের রিপোর্ট আসছে। কিন্তু ওই দু’জন কথা শোনেননি বলে অভিযোগ।
ব্লকের এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, ‘‘সোমবার বিকেলে রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ফতাইপুরে তাঁদের আনতে গেলে দেখা যায় তাঁরা বাড়িতে। সেখানে জানতে পারি বেঙ্গালুরু ফেরত ২৯ বছর বয়সি ওই যুবক নমুনা সংগ্রহের পরের দিন ভোরবেলায় স্কুল থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে যান এবং ওই যুবকের জামাইবাবু সোমবার সকালে একই ভাবে বাড়ি যান। তাঁরা এলাকার একটি বিয়েবাড়িতেও যান। রিপোর্ট পাওয়ার পর তাঁদের কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁদের সংস্পর্শে আসা দু’বছরের এক শিশু-সহ মোট ১২ জনকে আইসোলেশন-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তেহট্টের মহকুমাশাসক অনীশ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আক্রান্তের গোটা পাড়া অর্থাৎ মুসলিমপাড়া কনটেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে।’’ কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কেন স্কুলের নিভৃতাবাসগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ফতাইপুরের মুসলিম পাড়া এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য ইউসুফ মালিতা বলেন, ‘‘স্কুলে থাকবে বলে স্কুল চত্বর পরিষ্কার করা, ফ্যান লাগিয়ে দেওয়া, সমস্ত কিছু করা হয়েছে তাঁদের জন্য। নমুনা পরীক্ষা করার পরও তাঁদের বলা হয়েছিল স্কুলে থাকতে। কিন্তু কে কার কথা শোনে? গালিগালাজ করে স্কুল থেকে পালিয়ে যান তাঁরা। সেখান থেকে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে তাঁরা গিয়েছিলেন।’’