নিহতের শোকার্ত পরিবার। ইনসেটে, খুন হওয়া অমর দাস। নিজস্ব চিত্র
ক্লাবের মধ্যে এক যুবককে গুলি করে খুন করল দুষ্কৃতীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম অমর দাস (৩৩)। বৃহস্পতিবার রাতে চাকদহ থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ক্লাব থেকে খানিকটা দূরে বিলপাড়ায় মাসির বাড়িতে থাকত অমর। তাঁর লটারির টিকিট বিক্রির দোকান রয়েছে। খুচরো এবং পাইকারি টিকিট বিক্রি করতেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ এলাকার মানুষ গুলির শব্দ শুনে ছুটে গিয়ে দেখে, ক্লাবের মেঝেয় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে অমর। শুক্রবার অমরের মাসির অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিবেশী জয়ন্ত দাস এবং ওই পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা বিজয় বিশ্বাসকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ক্লাবের মধ্যে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নিজেদের মধ্যে গন্ডগোলের সময়ে গুলি চালালে ওই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছোট থেকেই চাকদহ ব্লকের হিংনারা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিলপাড়া গ্রামে মাসির বাড়িতে থাকতেন অমর। বাড়িতে স্ত্রী ছাড়াও রয়েছে দশ বছরের ছেলে আর ন’মাসের মেয়ে। কাঁদতে কাঁদতে তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মী বলেন, “বোনের জন্মদিন ছিল। রাতে আমাদের সঙ্গে সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল ওর। বিকেল ৫টার পরে বাড়ি থেকে মোটরবাইক নিয়ে বেড়িয়ে গেল। রাতে একবার কথা হল, বলল, ক্লাবে আছে। তার পর আর বাড়ি ফেরেনি। রাতে প্রতিবেশীদের মুখে শুনি, ওকে খুন করা হয়েছে।” তিনি বলেন, “বিয়ে আগে ওর শত্রু ছিল বলে শুনেছি। বিয়ের পরে কোনও শত্রু ছিল না। কী কারণে তাকে খুন করল, বুঝতে পারছি না।
অমরদের বাড়ি কল্যাণী শহরের সীমান্ত এলাকায়। সকালে ছেলের মৃত্যু সংবাদ শুনে তার মা দীপালি দাস চাকদহে চলে আসেন। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “যাদবপুরেওআমাদের বাড়ি রয়েছে। আমার পাঁচ ছেলে। অমর সকলের ছোট। আমার দিদির কোনও সন্তান ছিল না। সেই কারণে সে এখানে মাসির বাড়িতে থাকত। ওকে কল্যাণীতে চলে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু ও সে কথা শোনেনি।”
চাকদহ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য শ্রীকান্ত রায় বলেন, “ওই যুবক কোন দল করত বলে আমাদের জানা নেই। পুলিশের কাছে এলাকায় শান্তি বজায় রাখার জন্য পদক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছি।” কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করানো হয়েছে। আজ, শনিবার ধৃতদের কল্যাণী আদালতে হাজির
করানোর কথা।