আঞ্জুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
শমসেরগঞ্জে মহিলার খুনের ঘটনার কিনারা করল পুলিশ। এই ঘটনায় নিহত আঞ্জুয়ারা খাতুনের মোবাইলের কললিস্টের সূত্রে ধরে এক যুবককে মঙ্গলবার গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের নাম হবিবুর রহমান। পুলিশের দাবি, বছর চল্লিশের ওই যুবক জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে।
স্থানীয় এবং পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি মামলায় আঞ্জুয়ারার স্বামী কিছুদিন আগে জেলে গিয়েছেন। স্বামী জেলে যাওয়ায় আঞ্জুয়ারা বাপেরবাড়িতে মার কাছে চলে এসেছিলেন। নিহতের পড়শিরা জানিয়েছেন, এলাকায় পরোপকারী বলে সুনাম ছিল তাঁর। পাড়ায় যে কোনও প্রয়োজনে তাঁকে পাওয়া যেত। সে কোনও প্রসূতিকে নিয়ে যাওয়াই হোক কিংবা কোনও সদ্যোজাতকে পোলিয়ো খাওয়াতে নিয়ে যাওয়া। যে কোনও বিপদে তাঁকে ডাকতেন সকলে। পুলিশের দাবি, সম্প্রতি পাড়ারই যুবক হবিবুরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল ওই তরুণীর। তাঁদের দু’জনকে একসঙ্গে ঘোরাঘুরিও করতে দেখা যেত।
শমসেরগঞ্জ থানার পুলিশ সূত্রে খবর, হবিবুরের সঙ্গে আঞ্জুয়ারার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গ্রামের শেষে একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে তাঁরা মাঝেমধ্যে দেখা করতেন। ওই যুবকও বিবাহিত। আঞ্জুয়ারার মৃগী রোগ ছিল। ধৃত যুবক জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে, তিন মাস আগে ঘটনার দিন ওই বাড়িতেই তাঁরা দু’জন গিয়েছিলেন। সেখানে গল্পগুজব করার সময় হঠাৎই মৃগী রোগ দেখা দেয় আঞ্জুয়ারার। তিনি চিৎকার করতে থাকলে তাঁর মুখে হাত চাপা দিয়ে আওয়াজ থামানোর চেষ্টা করে হবিবুর। সম্পর্কের কথা জানাজানি হওয়ার ভয়েই সে ওই চেষ্টা করেছিল বলে পুলিশ মনে করছে। তাদের দাবি, হবিবুর জানিয়েছে, হাত চাপা দিয়ে চুপ করাতে না পেরে আঞ্জুয়ারার শাড়ির আঁচল সে তাঁর গলায় পেঁচিয়ে ধরে। শ্বাসরোধ হয়ে মারা যান আঞ্জুয়ারা। এরপর সে দেহটি ওই বাড়ির সিঁড়ির নীচে বালির মধ্যে পুঁতে দেয়। দেহ পুঁতে দেওয়ার পর সে বাড়ি চলে আসে। প্রসঙ্গত, মাস তিনেক আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন আঞ্জুয়ারা। দিন দুয়েক আগে এলাকার একটি নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে তাঁর পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে প্রথমেই পুলিশ মৃতার মোবাইল ফোনের তথ্য ঘেঁটে দেখে। পুলিশের একটি সূত্রে খবর, সেই তথ্য ঘেঁটেই তারা হবিবুরের নম্বর পায়। দেখা যায়, ওই মহিলার ফোন থেকে একটি নম্বরে ফোনের প্রায়ই ফোন করা হত। ওই যুবকের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার ধৃতকে আদালতে তোলা হবে।