দোতলার ঘর থেকে আচমকা গুলির শব্দে চমকে উঠেছিলেন বাড়ির লোকজন। তড়িঘড়ি ছুটে গিয়ে তাঁরা দেখেন, মেঝের উপরে পড়ে রয়েছে প্রসেনজিৎ ঘোষ (২৭)। রক্তে চারপাশ ভেসে যাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কান্দি মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগেই তিনি মারা যান।
বৃহস্পতিবার রাতে কান্দির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোপীনাথপুরের ওই ঘটনার পরে প্রসেনজিতের বাড়ি থেকে পুলিশ একটি সেভেন এম এম পিস্তল উদ্ধার করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই আগ্নেয়াস্ত্র দিয়েই আত্মহত্যা করেছেন ওই যুবক। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘ওই যুবকের কাছে কী ভাবে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র এল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
কান্দি বাজারে প্রসেনজিতের মোবাইলের দোকান রয়েছে। মাস সাতেক আগে তিনি ওই এলাকাতেই বিয়ে করেন। স্ত্রী অঙ্কিতা এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন। প্রসেনজিতের বাবা, পেশায় স্কুল শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলছেন, ‘‘ছেলের কাছে কী ভাবে ওই আগ্নেয়াস্ত্র এল তা বুঝতে পারছি না। তবে বেশ কিছুদিন থেকে ও মানসিক অবসাদে ভুগছিল।’’ কারণটা অবশ্য স্পষ্ট করে বলতে পারেননি রবীন্দ্রনাথবাবু।
শুক্রবার ছিল উচ্চ মাধ্যমিকের সংস্কৃত পরীক্ষা। স্বামীর মৃত্যসংবাদ পেয়ে অঙ্কিতা ভেঙে পড়েন। তবে রবীন্দ্রনাথবাবুই তাঁকে জোর করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠান। অঙ্কিতা বলেন, ‘‘সপ্তাহ দু’য়েক ধরে রাতে ও ঘুমের ওষুধ খেত। ঘুম হতো না বলে আমিও নিষেধ করিনি। তবে শ্বশুরমশাইকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম।”
প্রসেনজিতের মোবাইলের দোকানেই কাজ করেন তাপস শেখ। তাঁর কথায়, ‘‘প্রসেনজিৎ খুব চাপা স্বভাবের ছেলে ছিল। হঠাৎ করে কেন ও এমন একটা সিদ্ধান্ত নিল বুঝতে পারছি না।
প্রসেনজিতের মা দীপালি ঘোষ বলছেন, ‘‘ছেলের খাওয়া শেষ হলে উপরের ঘরে উঠে গিয়েছিল। আমরা সবাই তখন নীচের ঘরে খাচ্ছিলাম। তখনও এমন কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলল। কেন ও নিজেকে এ ভাবে শেষ করে দিল পুলিশ তার তদন্ত করুক।’’