প্রতীকী ছবি।
জেলার মধ্যে একমাত্র হার্টের হাসপাতালটি রয়েছে কল্যাণীতে। সেখানে পরিষেবা কোনওদিন আহামরি না হলেও জেলার মানুষের কাছে সরকারি স্তরে এর থেকে ভাল কোনও বিকল্পও ছিল না। বেসরকারি স্তরেও হৃদরোগের কোনও হাসপাতাল বা কার্ডিওলজিস্টের চেম্বার জেলায় নেই বললেই চলে।
ফলে জেলার দূরবর্তী এলাকা, এমনকি পার্শ্ববর্তী একাধিক জেলা থেকেও মানুষ মূলত ট্রেনে এই হাসপাতালে দেখাতে আসতেন। লকডাউনে ট্রেন বন্ধ থাকায় হৃদরোগের চিকিৎসার এই সবেধন বিকল্পের পথ তাঁদের কাছে বন্ধ হয়েছে। তার বদলে ট্রেনে কলকাতার হাসপাতালে যাবেন, সেই পথও বন্ধ।
কল্যাণীর গাঁধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে সব সময়েই রোগীর ভিড় লেগে থাকে। নদিয়া জেলা তো বটেই, পড়শি একাধিক জেলা থেকে রেফার হয়ে রোগীরা আসেন এই হাসপাতালে। লকডাউনের আগে রাতেও একের পর এক রোগী রেফার হয়ে আসতেন। আউটডোরে প্রতিদিন শতাধিক রোগী এসে ভিড় করতেন। অধিকাংশই আসতেন ট্রেনে। এঁরা এখন চরম সমস্যায় পড়েছেন।
গাঁধী মেমোরিয়াল হাসপাতাল সূত্রের খবর, হার্টের হাসপাতাল হওয়া সত্ত্বেও বহু দিন ধরে এই হাসপাতালে ওপেন হার্ট সার্জারি হয় না। সার্জেনের অভাবে বাইপাস সার্জারিও বন্ধ। পেসমেকার বসানো, আঞ্জিওগ্রাম, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির মতো কিছু পরিষেবা শুধু মেলে। যদিও গত প্রায় কুড়ি দিন ধরে হাসপাতালে কোনও পেসমেকার ছিল না। মাত্র দিন দু’য়েক হল তা এসেছে। যখন পেসমেকার ছিল না সেই সময় এক দিন মাঝ রাতে ধুবুলিয়ার সিংহাটি থেকে এক বৃদ্ধাকে বাড়ির লোক জন নিয়ে এসেছিলেন গাঁধী হাসপাতালে। রোগীর হৃদযন্ত্রে বড়সড় ব্লক ছিল। দ্রুত পেসমেকার বসানোর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু হাসপাতালে পেসমেকারই নেই। ফলে ওই রাতে বৃদ্ধাকে নিয়ে পরিবারের লোককে ছুটতে হয় কলকাতায়। এখন তিনি কলকাতাতে ভর্তি। এ দিকে ট্রেন বন্ধ। বাড়ির লোককে প্রতিদিন গাড়ি ভাড়া করে কলকাতায় তাঁর কাছে যেতে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর দূরদূরান্তে গরিব রোগীরা কেউ আসতে পারছেন না। বাস চলছে কম। তা ছাড়া কল্যাণীর যে এলাকায় গাঁধী হাসপাতাল সেই এলাকার সঙ্গে বাসের সংযোগ নেই। আর কল্যাণীর স্টেশনের পাশে রয়েছে ওই হাসপাতাল। ট্রেন বন্ধ। ফলে রোগীরা আসতে পারছেন না।