Coronavirus Lockdown

এই মুম্বই অচেনা, তবু ফিরতে হবে

বেকার ঘরে বসে না থেকে পেটের ভাতের জোগাড়ে তাই আগেভাগেই সে নাম লিখিয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের দলে।

Advertisement

বিদ্যুৎ মৈত্র

নবগ্রাম শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২০ ০৬:১৫
Share:

ছবি এপি।

সবে গোঁফের রেখা উঠেছে। তার মধ্যেই মাস দুয়েক আগে আঠারোয় পা দেওয়া নুরনবি শেখ রোজগারের আশায় পাড়ি দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্র। ফি বছর নবগ্রাম থানার লক্ষ্মণপুর গ্রামের তরুণ যুবকরা ভিড় করে বাণিজ্য নগরী মুম্বইতে। দু’পয়সা বেশি রোজগারের আশায় সেই ভিড়ে পা বাড়িয়েছিলেন নুরনবিও। বাবা, মা, দাদি আর দুই ভাই বোনের সংসারে তাঁদের নিজস্ব বলতে বিঘা খানেক জমি। সেই জমিতে ধান চাষের পাশাপাশি অন্যের জমিতে দিনমজুরও খাটেন নুর নবির বাবা সুখটান শেখ। মাধ্যমিক পাশ নুর নবি বলছেন, “পড়াশোনার খরচ আমাদের মতো সংসারে সম্ভব নয়।” বেকার ঘরে বসে না থেকে পেটের ভাতের জোগাড়ে তাই আগেভাগেই সে নাম লিখিয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের দলে।

Advertisement

পরিযায়ী শব্দটা নতুন শুনেছে নুর নবি। বলছেন, “আমাদের পরিযায়ী বলে কেন?” ভিন্ রাজ্যে একটা নির্দিষ্ট সময় নিজের রাজ্যের বাইরে রোজগারের জন্য যারা যায় তাদের পরিযায়ী শ্রমিক বলে। যা শুনে টিনের ছাদের মাটির দালানে বসে নুর বলছেন “আমাদের মাথার ওপর পাকা ছাদ নেই। পেটে ভাত নেই। এ রাজ্যে থেকে কি রোজগার হবে? তাই তো আমরা নানা জায়গায় ঘুরে কাজ করি।”

দেশ জুড়ে লকডাউনে আটকে পড়ে নুর নবি। যে ক’টা টাকা রোজগার হয়েছিল, সব টাকা সেই সময় খরচ করে ফেলে সে। উল্টে ধার করে বাড়ি ফেরে। মাস খানেক হয়ে গেল বাড়ি ফিরে আসা। বসে না থেকে সরকারের একশ দিনের কাজে মাটি কাটার কাজে হাত লাগিয়েছেন তিনি। তিন দিন মাটি কাটার পর আপাতত কিছুদিন বিশ্রাম। তারপর আবার শুরু হবে কাজ বলছেন নুর নবি।

Advertisement

নুরের হিসাব, “মাটি কাটায় দিন প্রতি যদি ১৯০ টাকা দেওয়া হয় তাহলে তিন দিনে হয় ৫৭০ টাকা। আর মুম্বইতে দিনে পাই সাড়ে তিনশো টাকা, তিন দিনে হয় ১০৫০টাকা। যা দ্বিগুণেরও বেশি।”নুর বলছে, “লকডাউনের পরে যে মুম্বইকে দেখেছি, তার সঙ্গে আগের মুম্বইকে মেলাতে পারি না। দু’টো যেন আলাদা শহর। তবু অবস্থা স্বাভাবিক হলে, আবার সেখানেই ফিরব। না হলে রোজগার হবে কী করে?’’ সে জানাচ্ছে, এ বার বিপদের জন্য টাকা জমাতে হবে, কিন্তু ভিন্ রাজ্যেও যেতে হবে আমাদের।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement