এই গাড়ি থেকে মেলে আগ্নেয়াস্ত্র এবং তৃণমূলের উত্তরীয়। —নিজস্ব চিত্র।
পিস্তল, ধারালো অস্ত্র-সহ দু’টি গাড়ি আটক করেছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছেন মোট সাত জন। দু’টি গাড়িতেই তৃণমূলের উত্তরীয়, ব্যাজ ইত্যাদিও মিলেছে। এই নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে ঝাড়খণ্ড লাগায়ো পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। তৃণমূলের অভিযোগ, দলীয় পতাকা, উত্তরীয় ব্যবহার করে এ ভাবে নানা দুষ্কর্ম হচ্ছে। অন্য দিকে, এ নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার ঝাড়খণ্ডের নিরসা থানার গোপালগঞ্জ এলাকায় পুলিশ দু’টি গাড়ি আটক করে। গাড়িতে থাকা কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সন্দেহ হয় পুলিশের। এর পর গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পিস্তল, ছুরি এবং নগদ টাকা পাওয়া যায়। ওই গাড়ি দু’টির সামনে লেখা, ‘সোশ্যাল জাস্টিস ফর ইন্টারন্যাশনাল সিভিল রাইট কাউন্সিল’ এবং ‘অ্যান্টি কোরাপশন ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া’। গাড়ির ভিতরে মেলে তৃণমূলের উত্তরীয়। পুলিশের অভিযোগ, নিরসা এলাকায় লরি দাঁড় করিয়ে তোলা আদায় করছিলেন অভিযুক্তরা। এই ঘটনায় মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের ধানবাদ আদালতে তোলে নিরসা থানার পুলিশ।
এর মধ্যে সেখানকার জিএসপি অমর পাণ্ডে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ধৃতেরা প্রত্যেকে পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিভিন্ন জায়গার বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘‘দু’টি গাড়ি আটক করা হয়েছে। ধৃত যুবকদের কাছ থেকে একটি পিস্তল ছাড়াও চাকু, নগদ টাকা, আইফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মিলেছে ডাকাতির বিভিন্ন রকম সরঞ্জাম।’’ পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় অভিযুক্তরা স্বীকারও করে নিয়েছেন যে, তাঁরা অপরাধমূলক কাজ করতেই বেরিয়েছিলেন। তাঁদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করা হবে।
অন্য দিকে, ধৃতদের গাড়ির ড্যাশবোর্ডে তৃণমূলের ব্যাজ, উত্তরীয় ইত্যাদি থাকা নিয়ে তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই জেলার যে ছেলেগুলো আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ধরা পড়েছে, তারা যদি অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে, আমরা চাইব ওদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।’’ পাশাপাশি, ধৃতদের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি। নরেন্দ্রনাথের কথায়, ‘‘গাড়ির ড্যাশবোর্ডে আমাদের দলের ব্যাজ বা উত্তরীয় রাখার প্রবণতা কয়েক মাস ধরেই বেড়েছে। এই অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করুক পুলিশ। আমাদের দল কোনও ভাবেই এই সব কাজকে প্রশ্রয় দেয় না।’’