—প্রতীকী চিত্র।
মৃতদেহ উপুড় হয়ে পড়ে থাকা সত্ত্বেও ছবি দেখে মা’কে চিনতে ভুল হয়নি সাত বছরের তৃষাণের! সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি দেখেই বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকা মাদারতলায় উদ্ধার হওয়া মহিলার মৃতদেহ শনাক্ত করেছে তাঁর ছেলে এবং বাপের বাড়ির লোকেরা। তাঁরাই জানিয়েছেন, মৃতের নাম পূর্ণিমা মজুমদার (৩০)। বাপের বাড়ি নবদ্বীপের মাজদিয়া-পানশীলা পঞ্চায়েতের মাঠপাড়া শিমুলগাছি অঞ্চলে।
ন’বছর আগে তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় নাদনঘাট থানার মাগনপুরের বাসিন্দা তমাল মজুমদারের। তাঁদেরই ছেলে তৃষাণ। শুক্রবার দুপুরে তৃষাণকে সঙ্গে নিয়ে পূর্ণিমাদেবীর জেঠামশাই রতন সরকার নবদ্বীপ থানায় এসে ছবি দেখে ভাইঝি পূর্ণিমার মৃতদেহ শনাক্ত করেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে কোতোয়ালি থানার ভালুকায় রাস্তার পাশে এক মহিলার গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি দেখে তাঁদের বাড়ির মেয়ে বলে চিনতে পারেন মৃত মহিলার পরিবারের সদস্যেরা। মৃতের জেঠামশাই রতন সরকার বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জীব মণ্ডলকে জানান। সঞ্জীববাবু তাঁদের নিয়ে প্রথমে নবদ্বীপ থানায় এবং পরে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের মর্গে পৌঁছোন। তত ক্ষণে সেখানে এসে গিয়েছিলেন মৃতার স্বামী, পেশায় আইনজীবী তমাল মজুমদার। তিনিও স্ত্রীকে শনাক্ত করেন।
রতনবাবু বলেন, “বুধবার লকডাউনের মধ্যেই পূর্ণিমা টোটো চেপে শ্বশুরবাড়ি মাগনপুর থেকে ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি মুকুন্দপুরের মাঠ পাড়ায় বেড়াতে আসে। পর দিন সকাল দশটা নাগাদ এক জন আসেন পূর্ণিমার সঙ্গে দেখা করতে। কিছু ক্ষণ কথাও বলেন। তার পর বাইকে করে চলে যান। তার পরেই শুক্রবার সকালে খুনের কথা শুনি। ভালুকায় দেহ পাওয়া গিয়েছে। মোবাইলে ছবি দেখে চিনতে অসুবিধা হয়নি।” তৃষাণ অবশ্য জানতে পারেনি মা কখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।
মুখ খুলতে চাননি কালনা কোর্টের আইনজীবী তমালবাবুও। জানা গিয়েছে, তিনি বছর সাতেক কালনা আদালতের আইনজীবী চঞ্চল রাহার জুনিয়র হিসাবে কাজ করছেন। এ দিন বিকেলে ময়নাতদন্তের পর পূর্ণিমার মৃতদেহ তাঁর স্বামীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হয়নি। তাতে প্রশ্নও উঠেছে। পূর্ণিমা দেবীর এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরও কেন বাপের বাড়ি বা শ্বশুরবাড়ির তরফে থানায় অভিযোগ হল না, তা নিয়ে অনেকেই অবাক।
দেহ দেখে বৃহস্পতিবার রাতেই পুলিশ জানিয়েছিল, তাদের অনুমান কোথাও খুন করে পরে এখানে দেহ ফেলে যাওয়া হয়েছে। যদি তাই হয়, তা হলে কে বা কারা কেন খুন করল তাঁকে? যদিও এ দিন এসপি জাফর আজমল কিদোয়াই বলেন, “খুব তাড়াতাড়ি খুনের কারণ জানা যাবে। অনেক তথ্যই পুলিশের হাতে এসেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এখন বেশি কিছুই বলা যাবে না।” তথ্য সহায়তা: সুস্মিত হালদার