— প্রতীকী চিত্র।
চড়া সুদে স্থানীয় এক মহিলার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর সঙ্গে অশান্তিতে জড়িয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি। সেখান থেকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে নদিয়ার তাহেরপুরে বাড়িতে ঢুকে রাজা ভৌমিক নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার ২৩৫ দিনের মধ্যেই মামলার নিষ্পত্তি করে এক মহিলা-সহ চার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল রানাঘাট ফাস্ট ট্র্যাক আদালত। মঙ্গলবার বিচারক মনদীপ দাশগুপ্ত দোষীদের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেছেন।
আদালত সূত্রে খবর, রানাঘাট-১ ব্লকের বারাসাত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভাদুড়ি গ্রামে স্ত্রী এবং ছেলেকে নিয়ে বসবাস করতেন রাজা। একটি বহুজাতিক সংস্থার জ়োনাল অফিসার হিসাবে কাজ করতেন তিনি। ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর বিকেলে তাঁর ছেলে টিউশনি পড়তে বাড়ির বাইরে গিয়েছিল। দোতলা বাড়িতে তখন রাজা এবং তাঁর স্ত্রী ছিলেন। সন্ধ্যায় তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন পরিচিত এক দম্পতি। তাঁরা চলে যাওয়ার মিনিট ১৫ পরে মুখ ঢাকা অবস্থায় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে কয়েক জন দুষ্কৃতী ওই বাড়িতে ঢোকে। দোতলা বাড়ির উপরের তলায় ছিলেন রাজা। এক তলায় ছিলেন তাঁর স্ত্রী এবং এক আত্মীয়। তিন আততায়ী ব্যবসায়ীর বাড়ির দরজায় এসে তাঁর নাম ধরে ডাকে। রাজার স্ত্রী দরজা খুলে দিতেই হুড়মুড় করে ঘরে ঢোকে তিন দুষ্কৃতী। তার পরেই চলে গুলি। স্থানীয়েরা আসার আগেই বাইক নিয়ে চম্পট দেয় তিন জন।
তদন্তে নেমে তাহেরপুর থানার পুলিশ নতুনপাড়া থেকে সৌরভ মজুমদার নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের ‘মূলচক্রী’ হিসাবে উঠে আসে রাসমণি বিশ্বাস নামে এক মহিলার নাম। তাকে বর্ধমান থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাসমণিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মহারাষ্ট্র থেকে হৃদয় মণ্ডল এবং রাজস্থান থেকে দেবব্রত বিশ্বাস নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে, ধৃত মহিলার সঙ্গে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেন নিয়ে রাজার গন্ডগোল চলছিল। সেখান থেকেই ভাড়াটে খুনি দিয়ে এই খুনের ঘটনা।
ওই খুনের মামলার মাত্র আট মাসের মধ্যেই অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করল আদালত।