করোনা-আতঙ্কে চুল হারিয়েছে বেলডাঙা

বেলডাঙা-রেজিনগর-নওদা জুড়ে, শুধু রাজ্যের আনাচকানাচ নয়, চিন থেকেও বেশ কিছু কারবারি এসে চুলের খোঁজ করতেন মুর্শিদাবাদের এই প্রায় গ্রামীণ জনপদে।

Advertisement

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

বেলডাঙা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:০১
Share:

সোনার নাকছাবি আর চুলের কারবার— বেলডাঙা এ দুই মাঝারি শিল্প নিয়ে রাজ্যের মানচিত্রে একটা জায়গা করে নিয়েছিল। বাজেটের ধাক্কায় সোনার নাকছাবি এখন মৃতপ্রায়। করোনাভাইরাসের ছায়ায় বন্ধ হতে বসেছে চুলের-কারবারও।

Advertisement

বেলডাঙা-রেজিনগর-নওদা জুড়ে, শুধু রাজ্যের আনাচকানাচ নয়, চিন থেকেও বেশ কিছু কারবারি এসে চুলের খোঁজ করতেন মুর্শিদাবাদের এই প্রায় গ্রামীণ জনপদে। কিন্তু ভাইরাসের আতঙ্কে এখন তাঁদের দেখা নেই। ফলে চিনে রফতানি বন্ধ, স্থানীয় কারবারিদের গুদামে জমছে চুলের পাহাড়।

ওই এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাঁচামাল হিসাবে গোছা গোছা চুল সংগ্রহ করার রেওয়াজ রয়েছে। সেই চুল পরিষ্কার করে, জলে ডুবিয়ে শ্যাম্পু করার পরে শোকানো হয়। তার পর তার সিংহভাগ চলে যায় চিনে।

Advertisement

চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী তার দাম, ৫০০ টাকা ১০ হাজার টাকা প্রতি কেজি। এলাকার প্রায় প্রতি বাড়িতেই চুল আঁচড়ানোর পরে মহিলারা চিরুনির আগায় জমে থাকা চুল প্লাস্টিকের প্যাকেটে জমিয়ে রাখেন। সেই চুল সাফ-সুতরো করার পরে বিমানে তা পাড়ি দেয় চিনে। কিন্তু করোনা-আতঙ্কে সেই কারবার এখন বন্ধের মুখে। চুলের কারবারিরা জানান, এই অবস্থায় চিনের কারবারিদের এ দেশে ভিসা মিলছে না। পরচুলার ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, চিনের ৫-৬ জনের এক একটি দল বেলডাঙায় এসে হোটেলে আস্তানা গাড়ে। কেউ কেউ বাড়ি ভাড়া নিয়েও মাসের পর মাস কাটান। ডিসেম্বরে নতুন চিনে নতুন বছরের উৎসবও ঘটা করেই হয় বেলডাঙায়। কিন্তু এ বার সে সবের বালাই নেই। গত মাস দেড়েক তাঁদের দেখা নেই। চুলের কারবারে এলাকার প্রায় ২ লক্ষ মানুষ জড়িয়ে। সেই সব স্থানীয় মানুষজনের মাসাধিককাল কাজ নেই।মুর্শিদাবাদ হেয়ার ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মিলন চৌধুরী বলেন, “আমাদের এই চুলের ব্যবসা মূলত চিনের উপর নির্ভরশীল। তাদের হাত ধরে আমাদের ব্যবসার রমরমা। কিন্তু করোনাভাইরাসের জেরে আপাতত ব্যবসা প্রায় বন্ধ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement