সত্যজিৎ বিশ্বাস। ফাইল চিত্র।
তাঁর স্বামীর খুনের পিছনে বড় কোনও মাথা রয়েছে। তা ছাড়া ওই ঘটনা ঘটানো সম্ভব ছিল না বলে জানিয়েছেন রূপালী বিশ্বাস। ২০১৯ সালে খুন হওয়া কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রী।
শনিবার রানাঘাট আদালতে সত্যজিৎ খুনের ঘটনায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নাম চার্জশিট দিয়েছে সিআইডি। সে কথা জানার পর রূপালী মন্তব্য করেন, ‘‘মুকুল রায় এক সময় তৃণমূল করতেন। এখন তিনি বিজেপি করেন। যে আমার স্বামীকে খুন করেছে বলে শুনেছি সে-ও নাকি বিজেপি করে। এত দিন হল খুন হয়েছে। কেন যে দোষীরা শাস্তি পাচ্ছে না বুঝতে পারছি না। দেশের সবাই দেখুক, খুনের কতটা কড়া শাস্তি হয়।”
২০১৯ সালের ৯ ফেব্রয়ারি শনিবার সরস্বতী পুজোর আগের রাতে নিজের পাড়ায় এক অনুষ্ঠানে সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হয়েছিলেন। পরদিন তাঁর ছায়াসঙ্গী মিলন সাহা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ঘটনার তদন্তে নামে সিআইডি। ওই ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার হয়েছিল। এরমধ্যে আগেই অভিজিৎ পুণ্ডারী, সুজিত মণ্ডল এবং মিলন ঘোষের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছিল সিআইডি। এখন তারা জেল হাজতে রয়েছে। প্রমাণের অভাবে কার্তিক মণ্ডল ওরফে মিঠূন এবং কালিপদ মণ্ডল ওরফে কালিদাসকে এই মামলা থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকারের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল সিআইডি। তিনি এখন জামিনে রয়েছেন। শনিবার মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল সিআইডি। এ দিন আদালতে অবশ্য রূপালী বা তাঁর পরিবারের কেউ ছিলেন না। স্বামীর মৃত্যুর পর লোকসভা ভোটে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়ে জগন্নাথের কাছে হেরেছিলেন রূপালী। তার পর প্রায় অন্তরালেই চলে গিয়েছিলেন। একমাত্র ছেলে সৌম্যজিৎ ছিল তাঁর সবকিছু।
এ দিন চার্জশিটে মুকুলের নাম থাকা নিয়ে নদিয়া দক্ষিণ জেলা বিজেপি সভাপতি অশোক চক্রবর্তী দাবি করেন, “আমাদের কেউ ওই খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। ওঁদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এটা শুধু এই জায়গায় নয়, গোটা রাজ্যের চিত্র। মুকুল রায়কে আটকানোর জন্য এ সব করা হচ্ছে। মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন।” আর তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা তেহট্টের বিধায়ক গৌরিশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘সত্যজিতের মৃত্যু এখনও আমাদের দুঃস্বপ্ন। আইন নিশ্চয়ই নিজের পথে চলে প্রকৃত দোষীকে চিহ্নিত করবে।’’