শিঁকে ছিড়বে কার ভাগ্যের?
বহরমপুর পুর নির্বাচন সামনে। কংগ্রেসের চেনা এবং প্রায় গড় বলে পরিচিত বহরমপুর পুর এলাকা নিয়ে তাই বাড়তি সতর্ক তৃণমূল। তার আগে লোকসভা নির্বাচনে পুর এলাকায় দলের ফল ভুলতে চাইছেন তাঁরা। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘নিচুতলার কর্মীদের প্রথমেই বলা হচ্ছে, লোকসভায় কী ফল হয়েছে ভুলে যান। নতুন লড়াই শুরু।’’
লোকসভা নির্বাচনেও অবশ্য দলের কর্মীরা কম পরিশ্রম করেননি। তবে ফল বেরোতে দেখা গিয়েছিল, জেলার অন্য দু’টি আসন পকেটে পুরলেও বহরমপুর শুধু অধরাই থেকে যায়নি, বহরমপুর পুরসভা এলাকার ২৮টি ওয়ার্ডেই পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। শহরের ২৮ টি ওয়ার্ডেই কংগ্রেস ছিল প্রথম স্থানে। অন্য দিকে তৃণমূল প্রার্থী ১৩টি ওয়ার্ডে তৃতীয় স্থানে এবং ১৫টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন।
এমন অবস্থার মধ্যে ভোটের কথা সামনে আসতে বহরমপুর পুরসভার বিরুদ্ধে অনুন্নয়ন ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সুর চড়িয়েছে কংগ্রেস এবং বিজেপি।
এ অবস্থায় কীভাবে মোকাবিলা করে পুরভোটে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে? জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা সাগরদিঘির বিধায়ক সুব্রত সাহা বলছেন, ‘‘লোকসভা ও পুরসভা ভোট এক নয়। পুর পরিষেবার উপরে পুরভোট অনেকটা নির্ভর করে। আমাদের দল ও সরকার পরিচালিত পুরসভা কিভাবে মানুষকে পরিষেবা দেয় তা শহরের মানুষ জানেন।’’ বরাবরই বহরমপুর তথা মুর্শিদাবাদ কংগ্রেসের খাসতালুক বলে পরিচিত। গত লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে আরএসপির প্রার্থী থাকলেও সিপিএম কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে পথে নেমেছিল। অধীর চৌধুরীরের বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে জয়ের ব্যবধান ছিল ৮০ হাজার ৬৯৬ ভোট। সেখানে তিনি শুধু বহরমপুর শহর থেকে প্রায় ৬৫ হাজার ভোট বেশি পেয়েছিলেন।
জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস তাই আশাবাদী, বলছেন, ‘‘অধীর চৌধুরীর নেতৃ্ত্বে পুরসভার উন্নয়ন দেখেছেন শহরবাসী। তেমনি তৃণমূলের নেতৃত্বে চলা পুরসভার অনুন্নয়ন ও দুর্নীতি দেখেছেন। জনমতকে কীভাবে বিক্রি করে দিয়েছে তাও মানুষ দেখেছেন।’’ যদিও শহর তৃণমূল সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘আমাদের সরকার দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে ইতিমধ্যে পুরসভার এক আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’
পিছিয়ে নেই বিজেপিও। তারাও বহরমপুর পুরভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। জেলা বিজেপির সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলছেন, ‘‘কংগ্রেস-তৃণমূল দীর্ঘ দিন এই শহরে শাসন ক্ষমতায় ছিল, শহরের উন্নয়ন হয়নি। সেটাই আমাদের অস্ত্র। ’’